মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ: ইতিকাফ মানুষকে দুনিয়ার সব কিছু থেকে আলাদা করে আল্লাহর ঘরে নিয়ে আসে। ইতিকাফ ঈমান ও আমল বৃদ্ধির মুখ্য সুযোগ। পবিত্র কোরআনে বিভিন্নভাবে ইতিকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কথা উল্লেখ করে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।
’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১২৫)
ইতিকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে কী আচরণ হবে, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফকালে স্ত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করো না। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক রমজানে ইতিকাফ করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষের দশকে ইতিকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রীরা ইতিকাফ করেছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৮৬৮, মুসলিম, হাদিস : ২০০৬)
আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক রমজানে ইতিকাফ করতেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ২০৪১)
জীবনের শেষ বছর নবী (সা.) ২০ বছর ইতিকাফ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। তবে যে বছর পরলোকগত হন তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
গোটা রমজান ইতিকাফ করার নজির আছে রাসুল (সা.)-এর জীবনে। মহানবী (সা.) নিজেই বলেছেন, ‘আমি কদরের রাতের সন্ধানে প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। অতঃপর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হলো যে তা শেষ ১০ দিনে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে। ’ এরপর মানুষ তাঁর সঙ্গে ইতিকাফে শরিক হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৯৪)
ইতিকাফের জন্য সর্বোত্তম স্থান হলো বাইতুল্লাহ শরিফ। বাইতুল্লাহ শরিফের পর মসজিদে নববী। এরপর বাইতুল মাকদিস বা মুকাদ্দাস। তারপর জুমা আদায় করা হয়—এমন মসজিদ। এরপর মহল্লার যে মসজিদে নামাজির সংখ্যা বেশি হয়, সে মসজিদে ইতিকাফে সওয়াব বেশি।