শ্রীলঙ্কার একটি আদালত বৃহস্পতিবার দেশটির সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষে, তার রাজনীতিবিদ পুত্র নামাল এবং তার ১৫ জন রাজনৈতিক মিত্রের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
গত সোমবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে তাদের দেশত্যাগের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল।
রাজধানী কলম্বোর ম্যাজিস্ট্রেট শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর সোমবারের হামলার তদন্ত করতে বলেছেন পুলিশকে। ওই হামলার পরই বিক্ষোভকারীরা প্রতিশোধমূলক সহিংসতার দিকে পরিচালিত হয়। যার ফলে নয়জনের প্রাণহানি এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটে।
আদালতে এক আবেদনে রাজাপাক্ষে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আদেশও চাওয়া হয়েছিল বলে আদালতের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ যেভাবেই হোক না কেন, যে কোনো সন্দেহভাজনকে আটক করার ক্ষমতা পুলিশের হাতেই আছে’।
সোমবারের সহিংসতার শিকার ব্যক্তিরা বলছেন যে, রাজাপাক্ষে এবং তার প্রধান সহযোগীরা তাদের প্রায় ৩ হাজার সমর্থককে বাসে করে রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করতে প্ররোচিত করেছিলেন।
রাজাপাক্ষের অনুগত লোকজন তার বাসভবন থেকে বেরিয়ে এসে লাঠিসোঁটা ও মুগুর নিয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়।
হামলার পর হাসপাতালে অন্তত ২২৫ জনকে ভর্তি করা হয়। অনেক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী এবং ক্যাথলিক পুরোহিতও ওই হামলায় আহত হয়েছিলেন।
ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে শীঘ্রই সারা দেশে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। রাজাপাক্ষের বাড়ি সহ তার অনুগতদের কয়েক ডজন বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সোমবারই রাজাপাক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ভারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত সৈন্যরা তাকে তার বাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক লঙ্কান নেতা বর্তমানে দ্বীপ রাষ্ট্রটির পূর্বের একটি নৌঘঁটিতে লুকিয়ে আছেন। তার ছেলে নামাল মঙ্গলবার এএফপিকে বলেছেন যে, দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছা তার পরিবারের নেই।
তবে, বিক্ষোভকারীরা এখন রাজাপাক্ষেকে তাড়া করতে ওই নৌঘাঁটির কাছেও জড়ো হচ্ছেন।