মোঃ ফজলুল করিম সিয়াম
আজ ঐতিহাসিক ৬ ডিসেম্বর । ফেনী মুক্ত দিবস।
১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পূর্বাঞ্চল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ২ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনীতে প্রবেশ করেন। ফেনীতে প্রবেশ করে মুক্তি সংগ্রামীরা মিছিল থেকে জাতীয় স্লোগান দেওয়া শুরু করলে প্রথমে শহরবাসী তা বিশ্বাস করতে পারেনি।তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সাধারণ মানুষও এই মিছিলে শরিক হতে থাকেন। স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের লক্ষণ দেখে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাক বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী ফেনীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ফেনী শহর হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।
এভাবেই দীর্ঘ নয় মাসের বজ্রকঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তিকামীরা লাল-সবুজের এক টুকরো পতাকা ফেনীর জমিনে ওড়ান। এই রণাঙ্গনে ১০ নভেম্বর দুইজন পাক সেনা অফিসারসহ ৭২ জন পাক সেনা আত্মসমথর্ন করেন।
ফেনীর বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নেয়। বিলোনিয়া যুদ্ধকৌশল বিভিন্ন দেশের সামরিক কলেজে ‘ব্যাটল অব বিলোনিয়া’ নামে পাঠ্য। বিলোনিয়া যুদ্ধ নিয়ে এ. এ. কে জেনারেল নিয়াজী তার বই “The Betrayal of East Pakistan” এ স্বীকার করেছেন এই বলে যে, A Brigade action which launched at Belonia was repulsed.
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাবে ভূষিত করা হয়। খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৪ জন বীর উত্তম, ৭ জন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর নারীদের অবদানও ছিল অসামান্য। ফেনীতে গ্যাজেটভুক্ত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ৩ জন। তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রহিমা বেগম, শাহাদাত আরা বেগম ও কাওসার বেগম। এ তিনজনের মধ্যে রহিমা বেগম বীরাঙ্গনা।
মুক্তির ৫২ বছরে ফেনীসহ দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতামকামীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।