রাজধানীর রমনা এলাকায় গত রবিবার গুলিবিদ্ধ হন মো. মানিক নামের এক যুবক। তাকে নিজ বাসায় গুলি করে আবার নিজেই হাসপাতালে নিয়ে যান শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন ওরফে বাচ্চু। এ ঘটনাকে ছিনতাইকারীর গুলি বলে চালানোর চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা রমনা বিভাগের (ডিবি) তদন্তে উঠে এসেছে, ইসমাইল নিজেই মানিককে গুলি করে। পরে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ছিনতাইয়ের নাটক সাজান তিনি। তবে অসাবধানতাবশত গুলি বের হয়ে বিদ্ধ হন মানিক এমন দাবি ইসমাইলের।
এ ঘটনায় ইসমাইল ও তার কর্মী মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। তাদের কাছ থেকে পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে একটি গাড়ি, যেটিতে করে গুলিবিদ্ধ মানিককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
গ্রেপ্তারের আগে ইসমাইল দেশ রূপান্তরকে জানান, তার পরিচিত মানিক পরিবহন নেতা ছিলেন। কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির পাশে ট্রাফিক অফিস গলিতে একটি গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সেখান দিয়ে মালিবাগের দিকে যাচ্ছিলেন মানিক। তখনই গুলিবিদ্ধ হন।
ডিবি রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় আমরা ইসমাইল হোসেন ও তার বাসার কর্মী মহিউদ্দিন রুবেলকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গুলি করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ইসমাইল দাবি করেছে অসাবধানতা বসত গুলি বের হয়ে বিদ্ধ হয়েছেন মানিক। তবে আমরা আসল ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।
জানা গেছে, ইসমাইল হোসেন রাজধানীর শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তিনি আগামী কমিটিতে সভাপতি পদপ্রার্থী। ইসমাইল পরিবহন শ্রমিকদের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত। তার পরিবহন ব্যবসা রয়েছে।
ডিবি সূত্র বলছে, রমনার বেইলি রোডের পাশে লেক ভিউ অ্যাপার্টমেন্টে ইসমাইলের বাসা। ওই বাসায়ই রবিবার বিকেলে গুলিবিদ্ধ হন মানিক। ইসমাইল প্রথম পর্যায়ে পুলিশের কাছে বলেন, ছিনতাইকারীরা মানিককে গুলি করেছেন। তিনি দাবি করেন, তিনি মোবাইলে খবর পেয়ে হাসপাতালে যান। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, ইসমাইল নিজেই মানিককে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
আহত মানিক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায় ঘুমাচ্ছেন মানিক। পাশে থাকা স্বজনেরা জানান, তার বাম পাজরে গুলি লেগেছে।