চট্টগ্রাম থেকে:মোঃ এরশাদ চৌধুরী৷
চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১নং রাজানগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বরণছড়ি এলাকার নাজিম উদ্দীনের ছেলে মোঃ মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদ(২০) নামের একজনের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার ও স্বজনরা৷
গত ৯ জুন বৃহস্পতিবার মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদ জ্বর নিয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক চন্দনের কাছে গেলে তিনি জ্বরের প্রাথমিক ঔষুধ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন,একদিন পর জ্বর না কমাতে পরের দিন শুক্ররবার মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদকে স্থানীয় আরেক পল্লী চিকিৎসক অলক দাসের কাছে নিয়ে যান তিনি চেকআপ করে কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা দেন রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে,পরের দিন শনিবার(১১ জুন) পরীক্ষার রিপোর্ট সংগ্রহ করে পূণরায় অলক দাসের কাছে যান তিনি পরীক্ষার রিপোর্টে জ্বরের অন্য কোন কারণ না পেয়ে নরমাল জ্বর ভেবে এন্টাভায়োটিক ইনজেকশন লিখে দেন,এরপরও টানা তিনদিন জ্বর না কমাতে মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদকে পার্বত্য চট্টগ্রাম কাউখালী স্বাস্থ্য কম্প্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়,সেইখান ডিউটিরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কিংবা ভাল একটি হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন,সেইখান থেকে মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদকে প্রথমে উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকার ডাক্তার রমেশকে দেখানো হলে তিনি কয়েকটি পরীক্ষা করানোর জন্য লিখে দেন,পরীক্ষা শেষে রিপোর্ট দেখে তিনি দূরত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে রেফার করে দেন,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পর মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদ মারা যান৷
মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদের মৃত্যুর কারণ হিসাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক অতিমাত্রার এন্টিবায়োটিক ঔষুধকে দায়ী করেছেন,খুরশেদের শরীরে টাইপেটসহ জন্ডিস আক্রান্ত ছিল যার ফলে জ্বর কমানোর এন্টিবায়োটিক লিভারসহ কিডনীকে সম্পন্ন অকেজো করে দিয়েছে বলে রোগীর স্বজনদের জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত চিকিৎসক৷
মোরশেদ প্রকাশ খুরশেদের পরিবার ও স্বজনদের দাবী রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভুল রিপোর্টের কারণ ও পল্লী চিকিৎসক অলক দাসের ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন মোরশেদ প্ৰকাশ খুরশেদ৷
মারা যাওয়া যুবকের মামা লতিফ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন আমার বাগীনাকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সংশ্লিষ্ট ও চিকিৎষক অলক দাসের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থার দাবী জানাচ্ছি৷
অন্যদিকে সেলিম নামের এক সবজি বিক্রতাও রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি বলেন গত কয়েকমাস আগে আমার স্ত্রী গর্ববতি কিনা পরীক্ষা করতে রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা দিই সেইখানে রিপোর্ট আসে আমার স্ত্রী গর্ববতি হয়নি,একমাস পর আবারও পরীক্ষা করে দেখার পরও রিপোর্ট আসে আমার স্ত্রী গর্ববতি হয়নি,যে রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার ফলে আমার স্ত্রীর আটমাসের মৃত বাচ্চা প্রসব করেন,এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীরও মৃত্যু ঝুকিতে ছিল৷
এই ব্যপারে জানতে ডায়াগষ্টিক সেন্টার কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা সবধরণের অভিযোগ অস্বিকার করেন এবং বলেন কিছু লোক দুষ্টমি করে এসব বলছে৷
ভুল চিকিৎসার ব্যপারে জানতে পল্লী চিকিৎসক অলক দাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন ৩০/৩৫ বছর ধরে তৃণমুলের মানুষের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি কখনো কারো ক্ষতি হয় এমন কোন চিকিৎসা সেবা দেয়নি,যে ছেলেটি মারা গেছে তার ১০৪ ডিগ্রী জ্বর ছিল আমি পরীক্ষা দিয়েছি সেইখানে ম্যালিরিয়া কিংবা টাইপেটের কোন লক্ষন আসেনি তবে লিভারের পয়েন্ট বেশি ছিল,আমি জ্বর কমানোর জন্য এন্টিবায়োটিক দিয়েছি যা অন্য কোন সমস্যা করার কথা নয়,আমার কোন দোষ থাকলে কিংবা তদন্ত সাপেক্ষে দোষ পেলে অবশ্যয় মাথা পেতে নিব,তিনি আরো বলেন রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রেজিঃ চিকিৎসকরাও পরীক্ষা করতে রেফার করেন এদের রিপোর্ট যদি ভুল হতো তাহলে অন্যরা কেন দিচ্ছে?তিনি বলেন এক সময় এই এলাকায় ভাল কোন চিকিৎসক ছিলনা আমরা তৃণমুলের ভরশা ছিলাম তখন এত পরীক্ষা করার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ছিলনা নরমাল ঔষুধ দিয়েও রোগী সুস্থ করেছি,আজ আমার মতো চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেছে কথাটি মানতে কষ্টকর৷
স্থানীয় অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অলক দাস ও রাজানগর ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিচার দাবী তুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷