‘সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি/ সংগ্রহ করছিলে দুর্গমের রহস্য/ চিনছিলে জলস্থল-আকাশের দুর্বোধ সংকেত,/ প্রকৃতির দৃষ্টি-অতীত জাদু/ মন্ত্র জাগাচ্ছিল, তোমার চেতনাতীত মনে।’ কবিগুরুর এই আদি ‘আফ্রিকা’র মতোই বিরূপের একটা ছদ্মবেশ ঘিরে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটেও।
গত দুই দশক দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযানে গিয়ে কখনোই জয়ের আরাধনা করতে পারেননি টাইগাররা। তাদের সেই চঞ্চল-ব্যাকুল মন অবশেষে আফ্রিকার কৃপণ আলোর অন্তঃপুর থেকে রশ্মিপাত করতে পেরেছে। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ৩৮ রানের ঐতিহাসিক জয়ে সিংহের ডেরায় আদতে থাবা বসাতে পেরেছে বাঘ।
বুধবার (২৩ মার্চ) তৃতীয় ম্যাচটি জিতে ‘সিংহরাজার মুকুট’টাও ছিনিয়ে নিলো বাংলাদেশ। বোলিংয়ে তাসকিনের ক্ষিপ্রতা, ব্যাটিংয়ে লিটন-তামিমের সাহসিকতা যেন দারুণ সুতোয় বাঁধলো জয়ের সুর। আর ম্যাচটা ৯ উইকেটে জিতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জিতলো লাল সবুজের বাংলাদেশ।
আগে ব্যাটিং করে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়ে ৫ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন আহমেদ।
সুপারস্পোর্ট পার্কের ব্যাটিং স্বর্গে যেকোনো দলই আগে ব্যাটিং করতে চাইবে। তাইতো টস জিতে ব্যাটিং নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ফিল্ডিং পাওয়ায় হয়তো খানিকটা হতাশ হয়ে থাকতে পারেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে বোলারদের দারুণ নৈপুণ্যতায় সেটা কেটে যাওয়ারই কথা বাংলাদেশের অধিনায়কের।
প্রোটিয়াদের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে পেয়েছিল ৪৬ রানের সূচনা। তবে তারপরের গল্পটা বাংলাদেশের বোলারদের।
একে একে পাঁচ ব্যাটারকে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের টপ অর্ডার ধসে দেন তাসকিন আহমেদ। এর মাঝে এই পেসারদের সঙ্গে দারুণ তাল মিলিয়েছেন শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানও।
প্রথম ওয়ানডের মতো ফের হাল ধরেছিলেন ডেভিড মিলার। ২৯ তম ওভারে তাসকিন তাঁকে ফেরাতেই খেই হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ওভারেই রাবাদাকে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তাসকিন।
এরপর দ্রুত সাকিব লুঙ্গি এনগিডিকে আউট করে ও অধিনায়ক তামিম কেশব মহারাজকে রানআউট করেন স্বাগতিকদের লেজ ছেটে দেন।