মুমিনুর রহমান , বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি)
বিভিন্ন খাতে সেবা না পাওয়া সত্ত্বেও প্রতি সেমিস্টারেই ফী বহন করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা টিউশন করিয়ে নিজেদের পড়ালেখার খরচ বহন করে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের প্রতি সেমিস্টারে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা সেমিস্টার ফী দিতে হচ্ছে যা অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্যই বহন করা দু:সাধ্য।”
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, “বর্তমানে আমাদের বেশ কয়েকটি খাতে সেবা না পেয়েই ফী প্রদান করতে হচ্ছে। যেমন প্রতি সেমিস্টারে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সেবা বাবদ আমাদের ২০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে, কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই সেবা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া চিকিৎসা খাতেও প্রতি সেমিস্টারে ২০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। অথচ চিকিৎসা কেন্দ্রে গেলেই দেখা যায় হয় চিকিৎসক নেই নয়তো প্রয়োজনীয় ঔষধ নেই। আবার পরিবহনখাতে প্রতি সেমিস্টারে নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা এবং বিভাগ উন্নয়ন ও সমতি বাবদ বিভাগভেদে নেয়া হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকা।
আমরা চাই এসকল খাতে ফী কমিয়ে আনা হোক এবং যে সকল খাতে পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছি না সেসকল খাতে সেবা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফী বন্ধ থাকুক। প্রয়োজনে পরিবহন, বিভাগ উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তুকি প্রদান করে শিক্ষার্থীদের ওপর ফী এর বোঝা কমানো হোক।”
এ বিষযে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সারজুল আলম স্বদেশ বলেন, “আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে ভর্তি হলেও কখনও কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ কিংবা ইন্টারনেট সুবিধা পাইনি। অথচ আজকেও এই খাতে ২০০ টাকা ফী দিয়ে এলাম। আবার চিকিৎসা খাতে গত ৬ বছরে সেবা পেয়েছি মাত্র ২ বার। তাও কিছু নাপা এক্সট্রা এবং এন্টাসিড ট্যাবলেট। বাবা-মা অত্যন্ত পরিশ্রম করে আমাদের টাকা পাঠায়। কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট সেবা, চিকিৎসা সেবা এই সবগুলোই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি, এসকল খাতে সেবা পেলে টাকা দিতে আপত্তি নেই কিন্তু সেবা নিশ্চিত না করে ফী নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমরা চাই এসকল সেবা পুরোপুরি নিশ্চিত করে ফী গ্রহণ করা হোক এবং সেবা নিশ্চিত করা না পর্যন্ত ফী গ্রহন বন্ধ থাকুক।”
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ড. এ.কিউ.এম মাহবুব বলেন, “এর আগে আমরা ফী কমানোর বিষয়ে ইউজিসির সাথে কথা বলেছিলাম। কারণ ফী কমালে সেই ঘাটতি পূরনে ইউজিসির বাজেট বেশী দিতে হবে। ইউজিসি ফী কমানোর বিষয়ে পজিটিভ ছিল না, তারপরও আমরা যতটা সম্ভব ফী কমিয়েছি।”
কম্পিউটার-ইন্টারনেট ফী, চিকিৎসা ফী এর বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “আমাদের একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরীতে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে যা যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত। আমরাতো আর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ফোনে ফোনে ইন্টারনেট কানেক্ট করে দিয়ে আসবো না, তাদেরকেই নিজ দায়িত্বে কানেক্ট করে নিতে হবে। আর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি, বর্তমানে আমাদের তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন এবং আমরা আরও একজন চিকিৎক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছি।”