বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাজ্য। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকেই বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতিদানকারীদের মধ্যে লন্ডন অন্যতম। বাংলাদেশের স্বাধীন রাজধানী হিসেবে ঢাকার অভ্যুদয় ঘটার পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার তোড়জোর শুরু হয়।
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন জোটভুক্ত দেশগুলোর কাছে থেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভ করার মুহূর্তেই ব্রিটিশ স্বীকৃতিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
১ ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতি দেয় সেনেগাল। প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে গ্রেট ব্রিটেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ১৯৭২ সালের আজকের (৪ এপ্রিল) এ দিনে। একইদিন স্বীকৃতি দেয় পশ্চিম জার্মানি, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, আইসল্যান্ড। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বিশ্বের ১৭টি দেশে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মধ্যে মুসলিম দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর ২৯ ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতি জানায় মালাওয়ি (মালাবি)।
দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, আমি মনে করি লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তার কারণে যুক্তরাজ্য (বাংলাদেশকে স্বীকৃতি) এ ভূমিকা পালন করে।
ডিকসন স্মরণ করেন যে, মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক ও জনগণের অত্যন্ত জোরালো সমর্থন ছিল। ‘মুক্ত নেতা হিসেবে লন্ডনে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর আত্মবিশ্বাসী প্রথম পদক্ষেপ বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যেকে প্রভাবিত করেছিল। পাকিস্তানি কারাগারে কারাবাস থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরার পথে প্রথমেই নিরপেক্ষ স্থান হিসেবে লন্ডনে যান।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকারের বিভাগ গুরুত্বসহকারে পালন করছে। ঐতিহাসিক এ সময়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, কর্মসংস্থান ও ভিসানীতি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। এসব বিষয়ে কূটনৈতিক সফলতার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।