Saturday , 4 May 2024
শিরোনাম

গাজায় জনসংখ্যা কমানোর গোপন নীলনকশা নেতানিয়াহুর

গাজায় গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। বিমান হামলা আর স্থল অভিযান শুরুর পর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।

এবার ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংসতা আর বর্বরতার আরেক ধাপ অতিক্রম করার খবর পাওয়া গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের লাশ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরির অভিযোগ উঠেছে দেশটির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি (২৬ নভেম্বর) জেনেভাভিত্তিক এনজিও সংস্থা ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর গাজায় নিহতদের শরীর থেকে অঙ্গ চুরির অভিযোগ এনেছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ছাড় পাওয়া মৃত ফিলিস্তিনিদের লাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চুরির বিষয়টি চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়া ইসরাইলের এই নৃশংস খবরের মধ্যেই এবার ঘৃণার ঝড় তুলল দেশটির যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আরেক জাতবিদ্বেষী ছকে।

গাজায় ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা সর্বনিম্নে নামিয়ে আনার গোপন নীলনকশা করেছেন নেতানিয়াহু। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে এমন পরিকল্পনার ছক কষছেন দেশটির কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন দারমার। শনিবার ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ইসরাইল হায়োমের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

ফিলিস্তিনিদের অঙ্গ চুরির বিষয়ে ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল ছাড়াও উত্তর গাজার আল-শিফা ও ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল থেকে কয়েক ডজন লাশ জব্দ করেছে। ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনি মৃতদের চোখের কর্নিয়া, লিভার, কিডনি ও হার্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চুরি করছে বলে দাবি জানাচ্ছে সংস্থাটি। আর এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণও তাদের হাতে আছে বলে জানানো হয়।

এছাড়া এনজিও সংস্থাটি ইসরাইলি সেনাদের একটি গণকবর থেকে ফিলিস্তিনিদের লাশ উত্তোলন করার খবরও দিয়েছে। যদিও পরিবারের সম্মতি ছাড়া মৃত ফিলিস্তিনিদের অঙ্গ সংগ্রহের বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইসরাইল। তবে এর আগে ইসরাইলি ডাক্তার মেরা ওয়েইস তার বই ‘ওভার দ্য ডেড বডিস’-এ ১৯৯৬ এবং ২০০২ সালের মধ্যে মৃত ফিলিস্তিনিদের শরীর থেকে চুরি করা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চিকিৎসা গবেষণায় ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেন। সে সময় ইসরাইলি রোগীদের দেহেও এসব অঙ্গ প্রতিস্থাপনের তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।

এদিকে গাজা জনসংখ্যা কমানো প্রকল্পে, ইসরাইলের জনসংখ্যার ঘনত্ব কমানোর পরিকল্পনায় গাজাবাসীদের সমুদ্রপথে উপত্যকা ছেড়ে ইউরোপ ও আফ্রিকা চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে বলেও নকশা করেছেন নেতানিয়াহু। তবে ইসরাইলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির মন্ত্রী দারমারের ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা কমানোর ছক জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই দেখেননি বলে এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ইসরাইল হায়োম। অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ফোরামেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।

ইসরাইলি গণমাধ্যমটির ধারণা, পরিকল্পনাটি সম্পর্কে জেনে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন নাকচ করে দিত এবং সব পক্ষই এটিকে অবাস্তব কল্পনা বলেই মনে করত।

শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান যুদ্ধ শেষে ভবিষ্যতে হামলা ঠেকাতে গাজার সীমান্তের ফিলিস্তিনের পাশে একটি ‘বাফার জোন’ তৈরি করতে চায় ইসরাইল। ছিটমহল প্রস্তাবের অংশ হিসাবে ইসরাইলের এই ইচ্ছের কথা বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্রকেও জানিয়েছে দেশটি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আঞ্চলিক একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, গাজা ও ইসরাইলের মধ্যে এই জোনটি তৈরি করতে চায় দেশটি। বাফার জোনটি বিস্তৃত হবে উত্তর থেকে দক্ষিণে। যা ভবিষ্যতে হামাস অথবা ইসরাইলের জন্য হুমকি এমন অন্যান্য সংগঠনের হাত থেকে ইসরাইলকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হবে। বাফার জোনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে মিসর, কাতার, তুরস্ক ও সৌদি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স। মন্তব্যের জন্য জর্ডানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

 

 

Check Also

ট্রাম্পের বয়স নিয়ে বাইডেনের খোঁচা

বয়স নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলছেই। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x