স্বাধীনতার ৫১তম বার্ষিকীতে শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা করেছে বিএনপি। রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন আর লাল-সবুজ-হলুদ টুপি মাথায় দেওয়া নেতাকর্মীদের হাতে হাতে ছিল লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া শোভাযাত্রাটি কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ মোড়ে ঘুরে আবার নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, আপনারা সকলে জানেন সরকারের বাধা-বিপত্তি সত্বেও আমাদের ১০টি বিভাগীয় গণসমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই সমাবেশগুলোতে জনগণ স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। দেশের মানুষ এই সমাবেশগুলোর মাধ্যমে বার্তা দিয়েছে তাদের মানুষ আর চায় না। তখন তারা কিংকর্তব্যবিমুঢ়, দিশেহারা হয়ে নানা রকমের কথা বলছে।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। এই ১০টি সমাবেশের কোনো জায়গায় কোনো অরাজকতা, কোনো ভায়োলেন্স, কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। অথচ গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা নাকি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য সমাবেশ করি। সরকার আবার ক্ষমতায় থাকার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার উসকাচ্ছে, মিথ্যাচার করছে। আপনারা কোনো উসকানিতে কান দেবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করব।
ফকিরেরপুল বাজার থেকে শুরু করে নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরা মোড় পর্যন্ত নয়াপল্টনের সড়কে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি বিজয় র্যালিটি সমাবেশে রূপ নেয়। জুম্মার নামাজের পরপরই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ড থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনের সড়কে সমবেত হয়।
এ সময় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল নেতাকর্মীদের হাতে। জিয়াউর রহমান-বেগম খালেদা জিয়া-ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো ছোট ছোট ট্রাকে একাত্তর সালের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত ‘জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা’র ভাষণ এবং একাত্তরে রচিত দেশাত্মকবোধক গান বাজানো হয়। পুরনো ঢাকার ঘোড়া গাড়ি এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজকারদের আত্মসমর্পণের দৃশ্যও জাসাসের কর্মীরা অভিনয় করে দেখান।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, শাহাজাদা মিয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা কর্মীদের সাথে হেটে র্যালিতে অংশ নেন।