Tuesday , 21 May 2024
শিরোনাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পেল কৃষকের ছেলে আলী হাসান।

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় ২২৮ (স্কোর ৮৬.৫০) তম হয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মো: আক্কাস আলীর ছেলে মো: আলী হাসান।

কৃষক বাবা আক্কাস আলী ও বোন মরহুমা লিপি আরার স্বপ্নসহ গ্রামের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছে আলী হাসান। ছোটবেলা থেকেই নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা। খেটে খাওয়া বাবার পরিশ্রমের ফল দিয়েছেন তিনি।ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেন ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার।এসএসসি পাস করার পর তার নতুন স্বপ্ন ভালো করে লেখাপড়া করে ভর্তি হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই স্বপ্ন বুকে ধারণ করে নিজেকে তৈরি করতে থাকে আলী হাসান।অবশেষে সেই অধরা স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় পেয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে যান তিনি।

স্থানীয়রা জানান,কোন বাধা যেন দমাতে পারেনি প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে ওঠা আলী হাসান এর শিক্ষাজীবনের পথ।তার এই অদম্য প্রচেষ্টাই তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে এজন্য আল্লাহর নিকট শুকরিয়া।

কৃষক বাবা আক্কাস আলী বলেন, ছেলে মেয়েদের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি এখনো করছি।
তাদের মানুষের মতো মানুষ করার জন্য অন্য বাবা মায়ের মত আমাদেরও স্বপ্ন ছিল আমাদের সন্তান বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়বে। অবশেষে আমার স্বপ্ন সার্থক হয়েছে।সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করি আমার সন্তান যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে সকলের মুখ উজ্জ্বল করে এবং সর্বদাই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।

তিনি আরো বলেন,আমি সন্তানের জন্য সব ত্যাগ স্বীকার করেছি তবু সন্তানকে কাজ করতে দিইনি লেখাপড়ার ক্ষতি হবে বলে। আলী হাসান কখনো সময় অপচয় করে ঘুরে বেড়ায়নি, মনোযোগী ছিল লেখাপড়ায়। ছোটবেলা থেকেই তার ভিতরে এক অদম্য শক্তির কাজ করতো তাই সফল হয়েছে আজ।

আলী হাসান এর চাচা জামাল উদ্দিন বলেন,আলী হাসান ছোটবেলা থেকেই মেধাবী।সে সব সময় লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। তার পিছনে গ্রামের মানুষ, শিক্ষকসহ যাদের শ্রম রয়েছে তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আলী হাসান বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পেয়ে সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করেছি।কারণ আল্লাহ আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমার বোন মরহুমা লিপি আারা আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো এবং বলতো সব সময় ভালো করে লেখাপড়া করতে হবে আর আজ আমি এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি আমার বোনের ভালোবাসা ও দোয়া ছিল বলেই আমার বোন যেন ওপারে ভালো থাকেন শুধু এই কামনায় করব আল্লাহ্ তায়ালা ভালো রাখুক আমার বোনকে। আমার বোন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছে। আমি বোনের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।আমার বোন বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি হত।

তিনি আরো বলেন, আমি সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান। আমার এ ভালো ফলাফলের পিছনে পরিবারের সদস্য, শিক্ষক সহ গ্রামের সকলের অবদান রয়েছে। আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন মানুষের মতো মানুষ হয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারি এবং সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

বাংলা৫২নিউজ/নাহিদ

Check Also

আয়কর গণনার বেসিক

বাংলাদেশের আয়কর ব্যবস্থা প্রচলন হয়েছিল ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলেই। পর্যায়ক্রমে, সর্বাধিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x