Friday , 17 May 2024
শিরোনাম

দিল্লিতে শেষ হলো তিন দিনব্যাপী বাংলা উৎসব

বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শেষ হয়েছে তিন দিনব্যাপী বাংলা উৎসব। গতকাল রোববার বিকেলে দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের বিপিনচন্দ্র পাল ট্রাস্ট মিলনায়তনে ছিল বর্ণাঢ্য এই উৎসবের সমাপনী আয়োজন। একই সাথে শেষ হয় নেতাজি-বঙ্গবন্ধু জনচেতনা যাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে যোগ দেন দুই বাংলার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও শিল্পীরা।

উৎসবের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইকোনমিক অ্যাডভাইসরি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. বিবেক দেবরায় বলেন, শিল্প-সংস্কৃতিসহ সবকিছুরই ভিত্তি হচ্ছে ভাষা। আর ভাষা হলো মানুষের জীবনবোধের প্রতিচ্ছবি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালির বাংলা ভাষা আজ বিশ্ব স্বীকৃত। তাই তরুণ প্রজন্মের মাঝে বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দিতে দুই বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

চলমান বিশ্বসংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতির গতিময়তা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার কারণে উভয় দেশের জনগণ ও উদ্যোক্তারা লাভবান হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, উভয় দেশের অর্থনীতি আজ প্রবৃদ্ধি অর্জনে অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে বেশি করে পারদর্শিতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উভয় দেশের মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও মানুষে মানুষে হৃদ্যতা বাড়াতে সহায়তা করছে। এবারের পহেলা বৈশাখকে ঘিরে দিল্লিতে বাংলা উৎসবে আয়োজন দু’দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে উভয় দেশের সম্প্রীতির বন্ধন তুলে ধরতে এবং সংস্কৃতির আদান-প্রদানে ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন বাড়ানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

উৎসবে সমাপনী আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মেমোরিয়াল সোসাইটির সভাপতি রিভা গাঙ্গুলী দাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলাম ও ঢাকা পদাতিক নাট্যদলের সভাপতি মিজানুর রহমানসহ দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা।

তিন দিনব্যাপী এই উৎসব সফলভাবে শেষ হওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন উৎসবের আহ্বায়ক ও বিহু ক্রিয়েশনের প্রধান নির্বাহী প্রিভেল পাল টিটু এবং উৎসবের সমন্বয়ক বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।

সমাপনী সাংস্কৃতিক পর্বে নাচ পরিবেশন করেন ঢাকার বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী শর্মিলা ব্যানার্জী ও তার নৃত্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। সবশেষে মঞ্চস্থ হয় নাট্যজন নাদের চৌধুরী নির্দেশিত ঢাকা পদাতিক এর নাটক ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’।

এই উৎসবের যৌথ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ এবং বিহু ক্রিয়েশন। এতে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এবং শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স টেকনোলজি।

Check Also

রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থীদের তালিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। তাই যেসব বাংলাদেশি নাগরিক আশ্রয়প্রার্থনা করে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x