মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেছেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার পাশাপাশি বাবা ও ভাইদের উচিত তাদের ঘরে থাকা নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন উপহার সামগ্রী হিসেবে সরবরাহ করে উৎসাহিত করা।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন বাল্যবিয়ে অবস্থা ও শহরের বস্তিতে মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে ইউএনএফপিএ দুইটি স্টাডি রিপোর্টের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভিন, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার পাশাপাশি বাবা ও ভাইদের উচিত তাদের ঘরে থাকা নারীদের স্যানিটারি ন্যাপকিন উপহার সামগ্রী হিসেবে সরবরাহ করে উৎসাহিত করা।
ব্যক্তিগতভাবে এমনটি করেন বলে জানিয়ে ওই সচিব বলেন, জেলা ও উপজেলা ভেদে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টয়লেট সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নারীরা তাদের কর্মস্থল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভিন বলেন, সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বহুমুখী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দলগত পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং তা নিশ্চিত করতে আমাদের ইউএনএফপিএ, দাতা, এনজিও এবং সবার সহযোগিতা অপরিহার্য।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে বাল্যবিয়ে সম্পর্কে মানুষের ধারণা এবং বাস্তবতার মধ্যে একটি বড় ব্যবধান রয়েছে।
গবেষণাগুলোর মাধ্যমে নারীদের মনের অভ্যন্তরীণ আওয়াজ বের হয়ে এসেছে জানিয়ে ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ডেপুটি প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে বলেন, মেয়েদের কেন্দ্রে রেখে আরও প্রমাণভিত্তিক, গঠনমূলক এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা করতে সবাইকে উৎসাহিত করে।
এই বিষয়গুলো গভীরভাবে বোঝার জন্য আরও শক্তিশালী এবং রিয়েল-টাইম ডাটা প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে গবেষকরা ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারির সময় বাল্যবিবাহ: একটি দ্রুত অধ্যয়ন’ এবং ‘বাংলাদেশের শহুরে বস্তিতে নারী ও কিশোরীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন এবং এই গবেষণার ওপর পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হয়।
কোভিড-১৯ এর সময়ে বাল্যবিয়ের নিয়ে করা গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির প্রথম বছরে বাল্যবিয়ে কমে গেছে এবং মহামারির সময় সামগ্রিক বাল্যবিয়ের হার জাতীয় হারের চেয়ে কম।
দ্বিতীয় গবেষণার ফলাফলগুলো অনুযায়ী প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারী এবং কিশোরীরা ঋতুস্রাব সম্পর্কে তথ্য-সংগ্রহ করতে সক্ষম হচ্ছে বেশি, তবুও সামগ্রিকভাবে অপর্যাপ্ত মাসিক স্বাস্থ্যবিধি তাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর যে নেতিবাচক পরিণতি হতে পারে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের ব্যবধান রয়েছে।
রিপোর্টে প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল পাবলিক টয়লেটগুলোতে মেয়েদের মাসিক চলাকালীন সুবিধা দেওয়া।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), আইএনজিও এবং জাতীয় এনজিও, শিক্ষাবিদ এবং নাগরিক সমাজের সদস্যরা।