তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ চায় সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হোক। বিএনপির জন্ম পেছনের দরজা দিয়ে, তারপরও আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে। তা ছাড়া, করোনা মহামারি স্তিমিত হয়ে যাওয়ার পর প্রথম রবিবার প্রায় ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী সভা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিতভাবেই দলের সম্মেলন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন, সে লক্ষ্যে বিভিন্ন উপকমিটি গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই।’
রবিবার দুপুরে রাজধানীতে সিরডাপ মিলনায়তনে মা দিবস উপলক্ষে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আয়োজিত ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের জন্য বিএনপির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় নির্দলীয় সরকারের কোনো সম্ভাবনা নেই। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকান, সবখানে নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। তা ছাড়া, নির্বাচন কখনো সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয় এবং নির্বাচনকালে সরকারের সবার চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়। সুতরাং বিএনপিকে আসলে নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। এই ভীতির ফলে তারা যে কেন স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করলো না, সেটিই অনেকের প্রশ্ন।’
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স-আরএসএফের প্রতিবেদনে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানের নিচে দেখানোর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ইতিপূর্বেও বলেছি এটি একটি বিদ্বেষমূলক প্রতিবেদন। আফগানিস্তানে যেখানে টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপনের কারণে নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়, যেখানে সাংবাদিকরা কোনোভাবেই কাজ করতে পারে না, সেই আফগানিস্তানের নিচে বাংলাদেশের অবস্থান দেওয়ার মাধ্যমে আরএসএফ নিজেরাই প্রমাণ করেছে যে, তারা বিদ্বেষপ্রসূত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।’
রেলের টিটিই বরখাস্তের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি না যে মন্ত্রী (রেলমন্ত্রী) মিথ্যা বলেছেন। আমার স্ত্রীর আত্মীয় সবাইকে আমি চিনি না, আমরা কেউই সব আত্মীয়কে চিনি না। পাশাপাশি আমি এটাও মনে করি যে, মন্ত্রী মহোদয়ের স্ত্রীর নির্দেশে কাউকে সাময়িক বরখাস্ত করা সমীচীন নয়।’
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আশীষ কুমার চক্রবর্তীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, সম্মাননাপ্রাপ্ত দশজন মায়ের সন্তানেরা বক্তব্য রাখেন।
গরবিনী মা হিসেবে নাদেরা বেগম, সাজেদা খাতুন, তাসকিনা ফারুক, জ্যোৎস্না রানী ধর, লুৎফা বেগম, আখতারা খানম, ঝর্ণা ঘোষ, সুরাইয়া চৌধুরী, শারমিন আকতার ও প্রতিমা রানী দাশের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ড. হাছান মাহমুদ।