Thursday , 2 May 2024
শিরোনাম

বান্দরবান লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ৬০কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির সম্মুখীন সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন

মুহাম্মদ আলী,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: বান্দরবান জেলার লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর লীজ প্রাপ্ত জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কর্তৃক জোর পূর্বক স্থাপনা নির্মাণ,লেবার শেড ও টেপার শেড ভাংচুর,১২হাজারের বেশী রাবার গাছ গাছ কেটে ফেলা, কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রাণ নাশের হুমকি এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ১০অক্টোবর সোমবার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ রাবার মালিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ও বান্দরবান লামা ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন। এসময় লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজের পরিচালক ও বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো: কামাল উদ্দিন, লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজের নেতা মোঃ হারুন, লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজের মোঃ জহিরুল ইসলাম,লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজের অন্যান্য শেয়ার হোল্ডার ও নেত্রীবৃন্দ, এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন
বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক, প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তি যোদ্ধা এম.এ হাকিম চৌধুরী, মুছা ফারুকী, প্রথম আলোর সাংবাদিক বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, আরটিভি প্রতিনিধি সাফায়ত হোসেন, সাংবাদিক আলাউদ্দিন, সাংবাদিক মুহাম্মাদ আলী, সাংবাদিক হ্লাসিংমারমা’সহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগন।

সংবাদ সম্মেলন বক্তারা বলেন,রাবার প্লটের পাহাড়ি জমি দখলে নিতেই গুটি কয়েক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায় আগুন নাটকসহ বিভিন্ন অভিযোগ সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে চলেছে,আগুনের কারণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিরা কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি আমরা ৬৪ জন বিনিয়োগকারী। বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকে আমরা রাবার প্লট লীজ পাওয়ার পর কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বাগান সৃজন করে আসছি। ১৬শ একর জমির মধ্যে ইতিমধ্যে ১৪শ একর জমিতে বাগান রাবার বাগান সৃজন করেছি। এ বাগান থেকে উৎপাদনও হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকী ৪০০ একর একর জমিতে রাবার বাগান সৃজন করতে গেলে ২০১৬ সালে হঠাৎ ভাসমান কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায় বৈধ কোন কাগজপত্র ছাড়াই প্লটের শেষ মাথায় রাতারাতি ৯-১০টি বাঁশের ঘর নির্মাণ করে জমি তাদের বলে দাবী তোলেন। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ,চেয়ারম্যান এমনকি বান্দরবান জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করি। খবর পেয়ে লামা রাবার ইন্ড্রাষ্ট্রিজের জমি জবর দখল চেষ্টা, গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া, মিথ্যা অভিযোগ তুলে হয়রানি ও হুমকির ঘটনায় সাংবাদিকরা সরেজমিন বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশ করেন। সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আমরা শ্রমিক লাগিয়ে বাগান সৃজন করার জন্য জঙ্গল পরিস্কার করি। লাংকম ম্রো ও মৌজা হেডম্যান যোহন ত্রিপুরা নামের দুই জনের নেতৃত্বে গুটি কয়েক জন গত ২৬ এপ্রিল কাটা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলায় আমাকে ১নং ও অন্য এক পরিচালকসহ ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার সূত্র ধরে ঈদের আগে কোম্পানীর ম্যানেজারসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। রাবার প্লটের জমি জবর দখলের চেষ্টায় একের পর এক অযথা হয়রানির কারণে আমরা বিনিয়োগকারীগন হুমকির মুখে আছি।

মোটকথা ভাসমান মুরুং ও ত্রিপুরা সমম্প্রদায়ের এ ধরনের কর্মকান্ডে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার উপক্রম হয়েছে বলেও জানান কোম্পানীর পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন। তাই রাবার কোম্পানির ম্যানেজারসহ শ্রমিক ও বাগানের নিরাপত্তা প্রদান এবং জবর দখল চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাগান সৃজনে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি।

সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল কোম্পানীর লোকজন এ জমি দখলে নিতে আমাদের একমাত্র জীবিকার উৎস্যে বাগানে আগুন লাগিয়ে আমাদের অনেক ক্ষতি সাধন করেছে। এতে পাড়ার লোকজন খাদ্য সংকটে ভুগছেন। আমাদের দাবি তিন পাড়ার ৩৯ পরিবারকে ৪০০ একর জমি ছেড়ে দিতে হবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আশ্রাফ আলী ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ত্রিপুরা ও মুরুং সম্প্রদায় কখনও একসাথে বসবাস করেনা। এখানে তারা যৌথভাবে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজর ক্ষয়ক্ষতি ও জমি জবর দখল করার উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালে হঠাৎ করে বিভিন্ন স্থান থেকে এসে পাড়া স্থাপন শুরু করে। বর্তমানে জমি নিয়ে কোম্পানী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও জানান তারা।
তবে অকপটে তারা স্বিকার করেন, তাদের কাছে হেডম্যান রির্পোট ছাড়া কোন বন্দোবস্তি কাগজ নেই বলে জানান।

এই বিষয়ে লামা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো:মোস্তফা জামাল জানান, উপজাতি ও লামা রাবার ইন্ড্রাষ্টিজের মধ্যে জায়গা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ মিমাংশায় একাধিকবার বৈঠকে হয়েছে। বৈঠকে উপজাতিদের দাবীর প্রেক্ষিতে কোম্পানী কর্তৃক ১৫০ একর জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হয়। উভয় পক্ষ এ সিদ্ধান্ত মেনেও নেন। কিন্তু বৈঠক থেকে বের হলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিরা উল্টে যান।

এ বিষয়ে সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাগান সৃজন করে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ অব্যাহত রেখেছে বলে দেখে আসছি। ত্রিপুরা ও মুরুং সম্প্রদায়ের লোকজন কখনো সেখানে ছিল না। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেন,আমরা আমাদের লীজের ১৬শ একর জমির বাইরে যদি অতিরিক্ত ১গন্ডা জায়গা বেশি থেকে থাকে তাহলে সেই অতিরিক্ত জায়গা আমরা ছেড়ে দেব বলে মন্ত্রী মহোদয়কে জানিয়েছি,সেই সময় বান্দরবানের জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার সহ উর্ধতন কর্মকর্তাকে উপস্থিত ছিলেন।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এর লীজ প্রাপ্ত জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশ কারী/দখলকারী সন্ত্রাসী গ্রুপের অত্যারের তান্ডবে এবং তৃতীয় পক্ষের মদদে ২০২২ ইং সালে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এর চার কোটি সাতাশ লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

Check Also

নরসিংদীতে গারদে আটক বন্দীকে খাবার না দেওয়ার অভিযোগ

সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী জেলা নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত গারদখানার এক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x