ইরানে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে তরুণীর মৃত্যুর জের ধরে গড়ে ওঠা রক্তক্ষয়ী প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যেই দেশটির গোয়েন্দারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অন্তত নয় জন নাগরিককে আটক করেছে।
যাদের আটক করা হয়েছে তারা ‘বিদেশি সংস্থার গুপ্তচর’ এবং চলমান বিক্ষোভের পেছনে তাদের হাত আছে কিংবা তারা এই বিক্ষোভে জড়িত বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিয়েছে।
এদিকে কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে বলেননি যে ইউরোপিয়ান ওই নয় জন নাগরিককে কোথা থেকে আটক করা হয়েছে। তবে তারা দশটি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, প্রতিবাদে বিদেশিদের কিংবা বিদেশে থাকা বিরোধী গোষ্ঠীর ইন্ধন আছে চলমান বিক্ষোভে।
আটক হওয়া এসব ব্যক্তিরা পোল্যান্ড, সুইডেন, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের নাগরিক বলে ইরানের গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
তারা বলছে, জার্মান, ফ্রান্স, ব্রিটিশ ও সুইডিশ দূতাবাসকে তাদের এজেন্টদের চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিলো।
তারা আরও দাবি করেছে যে, বিক্ষোভ চলার সময় এবং এর আগেও কয়েকবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে হয়তো আন্দোলন তৈরি কিংবা বিশৃঙ্খলাকে উষ্কে দেয়ার জন্য। এর মধ্যে ছিলো সাইবার হামলা এবং বিবিসি পার্সিয়ান ও ইরান ইন্টারন্যাশনালের মতো কিছু বেসরকারি মিডিয়ায় ‘দাঙ্গা পূর্ব ভুয়া সংবাদ’ ছড়ানো।
তবে দেশটিতে সহিংসতা কমে আসার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং মৃত্যুর সংখ্যাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
নিরাপত্তা হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি মৃত্যুর পর রাজধানী তেহরান থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, বিক্ষোভ সহিংসতায় এ পর্যন্ত শিশুসেহ ৮১ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ই সেপ্টেম্বর দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান বাইশ বছর বয়সী মাহসা আমিনি। হিজাব বিষয়ক কঠোর আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে।
সূত্র: বিবিসি