Friday , 3 May 2024
শিরোনাম

বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে খারাপ সময়ের অপেক্ষা করতে হবে

অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যাবেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের শরৎকালীন অবকাশ (ছুটি) শুরু হওয়ায় বিচারপতি হিসেবে আজই (বৃহস্পতিবার) শেষ কর্মদিবস তার। ফলে এদিন শেষবারের মতো এজলাসে বসবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ সময় তিনি বিদায়ী বার্তা দেন সবার জন্য।

বিচার বিভাগকে জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক ও সংবিধানের রক্ষক উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। মানুষ শাসন বিভাগ, আইন বিভাগের প্রতি আস্থা হারাতে পারে। কিন্তু বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারালে ওই জাতিকে খারাপ সময়ের জন্য, খারাপ দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিচার বিভাগ দরকার। অল্প খরচে স্বল্প সময়ে মানুষ যেন ন্যায়বিচার পান সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকারের রক্ষক, সংবিধানের রক্ষক। তাই বিচারকদের সাহসী ও সুবিচারক হতে হবে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমার উত্তরাধিকারী গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন এবং আমি এটাও মনে করি মহান আল্লাহতায়ালা তাকে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার অধিকারী করবেন এবং বিচার বিভাগকে আরো গতিশীল বিচার বিভাগে পরিণত করবেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এখানে আমার ৪৩ বছরের পদচারণা আজ থেকে স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মহাশক্তিতে বিশ্বাস করি, তিনি এই পবিত্র বিচারালয়, বিজ্ঞ বিচারক, বিজ্ঞ আইনজীবী, বিচারালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রক্ষা ও সঠিক পথে চলার তওফিক দান করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমার কর্মকালীন সময়ে সম্মানিত বিচারক, বিজ্ঞ আইনজীবী, আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, অর্থ, জনপ্রশাসন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ এবং সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির প্রত্যেক কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এবং সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা যে সহায়তা দিয়েছেন তা আমি কৃতজ্ঞতার সাথে সারাজীবন মনে রাখব।

বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কার্যকাল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মামলাজট নিরসনে তার উল্লেখযোগ্য সাফল্য থাকলেও অনিষ্পন্ন রয়ে গেছে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক মামলা।

হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।

 

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

১৯৫৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাসের পর আইনে ডিগ্রি অর্জন করে এ পেশায় যোগ দেন তিনি।

 

১৯৮১ সালে জেলা আদালত, ১৯৮৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগ ও ১৯৯৯ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বড় ভাইও আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন, যিনি ২০২০ সালের ১৬ জুলাই অবসরে যান।

Check Also

‘মানবাধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় দেখে না’

বাংলাদেশি হত্যার কী জবাব দেবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো? তিনি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এর জবাব চেয়েছেন। তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x