Sunday , 19 May 2024
শিরোনাম

শীতবস্ত্র বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল

মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী:

দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও জনজীবনে শীতের অনুভূতি প্রকট আকার ধারণ করছে। পাশাপাশি আছে ব্যাপক কুয়াশার দাপট। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন বইছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। শহরাঞ্চলে শীতের ছোঁয়া একটু কম। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে শীত চলেই এসেছে। প্রতি বছর শীত এলে দেখা যায়, অনেক মানুষ শীতে কষ্ট করে মারা যায়। প্রচ- শীতের প্রকোপ থেকে আত্মরক্ষার জন্য হতদরিদ্র অনেক মানুষেরই নেই ন্যূনতম শীতবস্ত্র, খাদ্যদ্রব্য, ওষুধপথ্য, উপযুক্ত আশ্রয় বা বাসস্থান।

শীত অনেকের জন্যই দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের গ্রামের অভাবী ও গরিব মানুষ। শিশু ও বয়স্ক মানুষের দুর্ভোগ বর্ণনাতীত। শীতে অভাবী মানুষের জন্য এখন জরুরি দরকার হয়ে পড়েছে শীতবস্ত্রের। কিন্তু গ্রামের এসব মানুষের অনেকের পক্ষে আলাদাভাবে শীতের কাপড় কেনা দুঃসাধ্য। তাই সমাজের বিত্তবান ও মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা যদি দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোগের মাধ্যমে এমন পরিস্থিতি থেকে শীতার্তদের রক্ষা করা যায়।

দরিদ্র মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। বদর যুদ্ধে বন্দি হজরত আব্বাস (রা.)-কে হজরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পোশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে মুদার গোত্র থেকে গলায় চামড়ার আবা পরিহিত বস্ত্রহীন কিছু লোক আগমন করল। তাদের করুণ অবস্থা দেখে তার চেহারা বিষণ্ন হয়ে গেল। তিনি নামাজ শেষে সাহাবায়ে কেরামের সামনে দান-সদকার উৎসাহমূলক খুতবা প্রদান করলেন। ফলে সাহাবায়ে কেরাম এত অধিক পরিমাণ দান করলেন যে, খাদ্য ও পোশাকের দুটি স্তূপ হয়ে গেল। এ দৃশ্য দেখে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত আনন্দিত হলেন, তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠল।
বস্ত্রদানের গুরুত্ব প্রসঙ্গে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করলে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো তৃষ্ণার্ত মুসলমানকে পানি পান করালে মহান আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সিলমোহর করা পাত্র থেকে পবিত্র পানীয় পান করাবেন।’সুনানে আবু দাউদ

এই হাড়কাঁপানো শীতে যে বিপুল জনগোষ্ঠী বর্ণনাতীত দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করছে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দ্বীনি দায়িত্ব। এ বিষয়ে হজরত রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি বিপদ দূর করবে, আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন তার সব বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষকে সচ্ছল করে দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দেবেন।’ সহিহ মুসলিম

Check Also

গাজায় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের

এম ডি সুমন মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র করেসপন্ডেন্ট: যুক্তরাষ্ট্র গাজায় চলমান সংঘাত শেষে ফিলিস্তিন উপত্যকাটিতে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x