Friday , 3 May 2024
শিরোনাম

সচেতন থাকতে হবে, সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে: আইজিপি

‌‘আমাদের মনে রাখতে হবে জঙ্গিদের হুমকি শেষ হয়নি। যতদিন পর্যন্ত বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না হবে ততদিন পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে। আমরা যদি কেউ আত্মতুষ্টিতে ভুগি তাহলে সেটা অন্যায় হবে। আমাদের এই দেশের ১৬ কোটি মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। যেন সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে।’

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এসব কথা বলেন।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় তারা রক্তপাত পছন্দ করে না, নির্মম হত্যাযজ্ঞকে পছন্দ করে না। আমাদের দেশে যে ইসলামি মূল্যবোধে প্রতিষ্ঠিত সেটি সুফি সাধকদের দ্বারা প্রচারিত ও প্রসারিত। ফলে আমাদের দেশে ইসলামি যে মূল্যবোধ প্রভাবিত সেটি অত্যন্ত শান্তিবাদী। সে কারণে বারবার জঙ্গিবাদ প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষতবিক্ষত করার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটি ছিল আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা, সংগতির অভিযাত্রা তার একটি বিশেষ মুহূর্তের বিশেষ প্রয়োজন। এ দেশ বারবার সন্ত্রাসবাদ কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছে। বারবারই শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের প্রতিহত করেছে। আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি এই সন্ত্রাসবাদ বাইরে থেকে এসে আছরে পড়েছে। আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় তারা রক্তপাত পছন্দ করে না, নির্মম হত্যাযজ্ঞকে পছন্দ করে না।

পুলিশ প্রধান বলেন, ৬০’র দশকের শেষ দিকে দেখেছি কমিউনিস্ট আন্দোলন। সেই সময়ে পশ্চিম বাংলায় নকশালবাদীদের মুভমেন্টের কারণে মার্কসবাদী কমিউনিস্টরা অস্ত্র হাতে তুলে নেয় এবং স্বাধীনতার পরে এই মার্কসবাদী আন্দোলন বিলুপ্ত হয়। তালেবানরা যখন যুদ্ধ করছিলো, বাংলাদেশ থেকে অনেকে সেখানে যায়। তারা ফিরে এসে হুজি গঠন করে। কিছু নিরীহ মানুষকে হত্যা করার চেষ্টা করে। সেটাও প্রতিহত করা হয়।

‘এরপর দেখি জেএমবি, বাংলা ভাই, আব্দুর রহমানদের আবির্ভাব ঘটে। তার পেছনে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের দেশে এই সময়ে যে জঙ্গিবাদে উত্থানটা হয় তার পেছনে অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। এ ধরনের ঘটনা এর আগে আমরা দেখিনি। এটিও সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থামাতে সক্ষম হয়।’

পুলিশপ্রধান বলেন, ২০১৬ সালে আল কায়েদা ও আইএসে উদ্বুদ্ধ হয়ে কিছু দেশিয় সন্ত্রাসী আবার বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করার চেষ্টা করে। সেটিও সাধারণ মানুষ ও সরকারের নেতৃত্বে পরাস্ত করা হয়। এই যে জঙ্গিবাদের সঙ্গে লড়াই, এটি সহজ ছিল না। লড়াইয়ের পেছনে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স পলিসি চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা জানি যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। সাধারণ মানুষকে খুন করা হয় তখন আমাদের বুঝতে হবে, কারা তাদের মোটিভেশন দিয়ে এই কাজগুলো করাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে। আইএস ও আলকায়েদার বিস্তারে সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী। এসব সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নির্দিষ্ট একটি ধর্মের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। যারা সদস্য হিসেবে মুসলিম নিরীহ মানুষদের হত্যা করছেন তারা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের হয়ে কাজ করছেন। এর কারণে আমাদের শান্তিপ্রিয় ধর্মকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হেয় করা হয়েছে। এই সন্ত্রাস দমনে সরকার এটিইউ প্রতিষ্ঠা করেছে। যার কারণে বর্তমানে দেশে সাতটি থেকে আটিটি ইউনিট লড়াই করছে।

তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে সপ্তাহে সপ্তাহে দেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতো। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো বিমান বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিলো। এখানকার দূতাবাসগুলোকে নন ফ্যামিলি মিশন ঘোষণা করেছিলো। আমরা সরকারের পলিসি ও মানুষের সহযোগিতায় বিপদজনক পরিবেশ থেকে জঙ্গিবাদকে আবারো পরাস্ত কতে সক্ষম হয়েছি।

Check Also

নরসিংদীতে গারদে আটক বন্দীকে খাবার না দেওয়ার অভিযোগ

সাদ্দাম উদ্দিন রাজ নরসিংদী জেলা নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত গারদখানার এক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x