ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে নারীরা সেহরির আগে খাবার তৈরি করার সময় যে ভবনে তারা অবস্থান করছিলেন সেখানে একটি বিমান হামলা হয়। এতে পরিবারের ৩৬ জন সদস্য নিহত হন। ওই হামলায় জীবিতদের বরাত দিয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) এ খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নুসিরাত শরণার্থীশিবির থেকে কিছুটা দূরে মধ্য গাজার বাড়িটিতে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে এবং একটি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে।
দেইর আল-বালাহ হাসপাতালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ১৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ আল-তাবাতিবি লাশ দেখিয়ে বলছিল, এটি আমার মা, এটি আমার বাবা, এটি আমার খালা এবং এরা আমার ভাই। তার বাম হাতও হামলায় জখম হয়েছে। আমরা যখন সেখানে ছিলাম তখন তারা বাড়িতে বোমা মেরেছে। আমার মা এবং আমার খালা সেহরির খাবার তৈরি করছিল। তারা সবাই শহীদ হয়েছে।
হাসপাতাল চত্বরে লাশের স্তূপ রাখার ওই যুবক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি ট্রাকে লাশগুলো রাখে।
এদিকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও রমজানের প্রথম শুক্রবার, সোমবার থেকে শুরু হওয়া মুসলমানদের পবিত্র এ মাসটি এখন পর্যন্ত ইসরায়েল-অধিভুক্ত পূর্ব জেরুজালেমে শান্তিপূর্ণভাবে কাটছে। কিন্তু গাজায় ভিন্ন চিত্র।
হামাস-চালিত সরকারের মিডিয়া অফিস থেকে বলা হয়, সম্প্রতি ৬০টি মারাত্মক বিমান হামলার মধ্যে নুসিরাতের হামলাটি সবচেয়ে ভয়াবহ। সরকারি মিডিয়া অফিসের সালামা মারুফ ইসরায়েলের এ ভয়াবহ বিমান হামলাকে রক্তস্নাত রাত বলে অভিহিত করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ইসরায়েলকে সতর্ক করা হয়েছে। রাফায় ইসরায়েলের এই অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্কতা জানিয়েছে জাতিসংঘ, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস। যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে বলে জানা গেছে। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭৩ হাজার।