কুষ্টিয়ার খোকসায় চোর সন্দেহে ফজল শেখ (৪০) নামে এক ব্যক্তিকেতে রাতভর পিটিয়ে বেঁধে রাখার পর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ফজল শেখ উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের সেনগ্রামের মৃত চৌধুরী শেখের ছেলে। পেশায় সাইকেল-ভ্যানের মেকার ছিলেন।
পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়ার খোকসা ও পাংশা উপজেলার সীমান্তবর্তী মেঘনা গ্রামের কাচারী বাড়ি এলাকার সামছুলের বাড়িতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করছিলেন। এ সময় ফজলকে হাতেনাতে ধরে কাচারী বাড়িতে বেঁধে গণপিটুনি দেওয়া হয়।
নিহতের স্ত্রী নার্গিস খাতুন জানান, রাত একটার দিকে বাড়িতে খবর আসে কাচারী বাড়ির খুঁটিতে বেঁধে গ্রামবাসী স্বামীকে মারপিট করছেন। গিয়ে দেখি খুঁটিতে বেঁধে রেখে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। এ সময় যন্ত্রণায় কাতর হয়ে বারবার পানি চাচ্ছিলেন তার স্বামী। কিন্তু তাকে এক ফোঁটাও পানি দেওয়া হয়নি। ব্যথার যন্ত্রণায় সারা রাত ধরে ছটফট করলেও নেওয়া হয়নি হাসপাতালে। এমনকি যন্ত্রণা কাতর অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানোর জন্য আমার শত আকুতিতেও মনে গলেনি তাদের। শেষ পর্যন্ত ভোররাতে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে নিস্তেজ হয়ে পড়েন ফজল শেখ। তখন তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকমৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসি।
তিনি আরও বলেন, ওই এলাকার আবু বক্কর, হোসেন, ইরি, সামছুলরা বেশি মেরেছে। ওরা বারবার বলছিল মেরে ফেল ওকে, মেরে ফেল। আমার স্বামী একজন মেকার, চোর নয়। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে কাচারিবাড়ির মোশারফের ছেলে বিপুল হোসেন জানান, রাতে সামছুলরা চোর ধরেছিল। গ্রামের লোকজন কাঁচারী বাড়িতে বেঁধে রেখেছিল। রাতে খুব ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। সকালে শুনলাম ষ্ট্রোক করে মারা গেছে চোর।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকালে সেনগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ফজলের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। চোর সন্দেহে এলাকাবাসী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।