এত টাকা! কিন্তু টাকার সাথে কাজের কোন মিল নেই! বালিথুবায় ব্রিজের কাজ শেষ না করেই বিল নিয়ে উধাও ঠিকাদার!
মনির হোসেন, চাঁদপুর প্রতিনিধি।।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বছর পেরিয়ে গেলেও দুই পাড়ের অ্যাপ্রোচ সংযোগ
বালু ভরাট না করায় এবং সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছেন অত্র অঞ্চলের হাজারো মানুষ।
উপজেলার ২ নং বালিথুবা ইউনিয়নের কৃতি সন্তান চাঁদপুর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম এ ডব্লিউ এম তোয়াহা মিয়া সাহেবের বাড়ির সামনে নির্মিত হয়েছে এ সেতু। যাহা চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সিরহাট-রামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক (ওয়াফদা রাস্তা) হতে বালিথুবা বাজার অভিমুখী তোয়াহা সাহেবের বাড়ির মধ্য দিয়ে রাস্তার ব্রিজ। ব্রিজটির কাজ ২০০২১-২২ অর্থ বছরের হলেও কাজ শেষ করে এক বছর আগে। ঠিকাদারকে কাজের বিলও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও সেতুর দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হয়নি। এতে করে এলাকার হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে মোঃ মহসিন চৌধুরী, হাফেজ খাজে আহমদ, মাহাবুব আলম চৌধুরী, মোস্তফা, শাহ আলম সহ অনেকে জানান, ছোট্ট এই ব্রিজটি করতে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যা দেখলাম টাকার সাথে কাজের কোন মিলই নাই। কারণ, ঠিকাদার একেবারেই নিম্নমানের কাজ করে মূল ব্রিজের কাজ শেষ করেছেন। এবং দু পাড়ের কাজ শেষ না করেই তারা চলে যায়। তারা আরও বলেন, ঠিকাদার কাজ ফেলে রেখে যেন এলাকার মানুষকে জনদুর্ভোগে ফেলেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ পিআইও অফিস চরম উদাসীন। তবে ঠিকাদারের বিল পরিশোধে ভুল করেননি প্রতিষ্ঠানটি। সেতুর একপাশে সরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অন্যপাশে বালিথুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালিথুবা আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিদিনই এই বিদ্যালয় গুলোর ছোট ছোট শিশুরা এবং পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে সেতু দিয়ে উঠানামা করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে বলে তাদের বিশ্বাস। এই নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এছাড়া বয়স্ক নারী-পুরুষ রোগী সহ শত শত পথচারীকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কাজের দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে কথা বলতে গেলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে না পেলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী অজয় ভৌমিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নতুন এসেছে, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। আর এই ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার কারণে সাবেক প্রকল্প কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়েই টাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। কিন্তু অজয় ভৌমিক ব্রিজের পরিপূর্ণ তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এবং কোন ঠিকাদার, কোন লাইসেন্সে এ কাজ করেছে তার মোবাইল নম্বর চাইলে তা দিতেও তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।