‘অদূর ভবিষ্যতে’ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান (আগ্রাসন) শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ক্রেমলিন। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্কাই নিউজকে এ আশার কথা জানান।
তিনি বলেন, হয়তো কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শেষ হবে। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি এ খবর জানিয়েছে।
পেসকভ বলেন, হয় রুশ সেনারা তাদের সামরিক লক্ষ্যে পৌঁছানোর মাধ্যমে এটি শেষ করবে, নতুবা মস্কো ও কিয়েভ আলোচনার মাধ্যমে একটি চুক্তিতে পৌঁছাবে।
ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেন, একটি শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা মূলত ইউক্রেনের অবস্থানের ‘দৃঢ়তা’ এবং রাশিয়ার শর্তে রাজি হওয়ার উপর নির্ভর করবে। তিনি বলেন, (ইউক্রেনের) দোনবাসে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো অপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
কিয়েভের নিকটবর্তী শহরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের কথিত গণহত্যার জন্য মস্কোর বিরুদ্ধে কিয়েভের অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পেসকভ বলেন, এ ধরনের দাবিগুলো ‘সাহসী মিথ্যাচার’ ছাড়া কিছুই নয়।
স্কাই নিউজের মার্ক অস্টিনকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র বলেন, ‘যে মৃতদেহগুলো বুচা (শহরের) রাস্তায় দেখানো হয়েছিল, রুশ সামরিক বাহিনীর সাথে এ নৃশংসতার কোনো যোগ থাকার বিষয়টি আমরা অস্বীকার করি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ভুয়া ও মিথ্যাচারের সময়ে বসবাস করছি।’
পেসকভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে সংঘটিত সব অপরাধের ‘সত্যিই স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্তে আগ্রহী’।
তার মতে, ইউক্রেনে রুশ অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য হল একটি বৃহত্তর সংঘাত এড়ানো, যথা একটি সম্ভাব্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ, যা সম্ভবত পারমাণবিক হামলার সাথে জড়িত। ইউক্রেন যদি ন্যাটোতে যোগ দেয় এবং তারপর সামরিক উপায়ে ক্রিমিয়া দখলের চেষ্টা করে, তখন পারমাণবিক অস্ত্রধারী ন্যাটো সদস্যদের এটিকে রক্ষা করতে হবে। পেসকভ মনে করেন, এটি একটি বিশ্বব্যাপী সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। দেশটির রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী।
যুদ্ধে দুই পক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছেন ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ।
সূত্র জানায়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের শহরগুলো ঘিরে রেখেছে রুশ সামরিক বাহিনী; হামলা চলছে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভেও।
রাশিয়ার গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় খারকিভ, মারিওপল শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে।