গাজীপুরে হোটেলে আটকে অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় এক নারীকে হত্যার ৪ বছর পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতভর ময়মনসিংহ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার গাজীপুর মহানগর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্কীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ময়মনসিংহের গৌরিপুর থানার পালোহাটি এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জিয়াউর রহমান ওরফে সুমন (৪৫), একই জেলার ত্রিশাল থানার ইয়াসিন আলীর ছেলে কামরুল হাসান সবুজ (৩৮) এবং মুন্সিগঞ্জের টুঙ্গিবাড়ি থানার রাউৎভোগ এলাকার আয়নাল ফকিরের ছেলে আমির হোসেন ফকির (৩৩)।
পিবিআই’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন জানান, ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল জয়দেবপুর থানার হোতাপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ খবর পায় যে, স্থানীয় বৈশাখী আবাসিক হোটেলে একজন নারীর লাশ রয়েছে। পরে হোতাপাড়া ফাঁড়ির এসআই রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ আবাসিক হোটেলের নিচ তলায় জেনারেটর রুমে ড্রামের ভেতরে অজ্ঞাতনামা এক নারীর (২৫) লাশ উদ্ধার করে। পরে ২০ এপ্রিল এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
জয়দেবপুর থানা পুলিশ মামলাটি প্রায় ৩ বছর তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে না পারলে আদালতের নির্দেশে মামলাটি গাজীপুর পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে মঙ্গলবার রাতভর ময়মনসিংহ ও মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হোতাপাড়াস্থ বৈশাখী আবাসিক হোটেলে বিভিন্ন মেয়েদেরকে এনে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হতো। গ্রেপ্তারকৃত জিয়াউর, আমির ও কামরুল এবং তাদের সহযোগীরা ঘটনার দিন অজ্ঞাতনামা নারী ভিকটিমকে ওই হোটেলের ২০৪ নম্বর রুমে রেখে বিভিন্ন মানুষকে দিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক করায়। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আসামিসহ তাদের সহযোগীরা মেয়েটির সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব করলে মেয়েটি প্রত্যাখান করে।
পরে তারা মেয়েটির সঙ্গে জোরপূর্বক অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য চেষ্টা করলে মেয়েটি বাধা দেয়। এরপর তারা মেয়েটিকে ওই হোটেলের ২০৪ নম্বর রুমে খাটের ওপরে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশটি খাটের নিচে রেখে দেয়। পরে তারা ওই হোটেলের মালিক ইকবাল হোসেনকে (৩৫) ফোনে জানালে তিনি মেয়েটির লাশ একটি ড্রামের ভেতর ভরে হোটেলের পেছনে খালি জায়গায় মাটির নিচে পুঁতে রাখার জন্য বলে। হোটেল মালিকের নির্দেশে লাশটি ড্রামে ভরে হোটেলের পেছনে পুঁতে রাখার জন্য গেলে সেখানে লোকজন থাকায় তারা লাশটি নিয়ে হোটেলের স্টোর রুমের মধ্যে রেখে পালিয়ে যায়।