ভোগান্তির নাম চাঁদপুর বিআরটিএ
মনির হোসেন, চাঁদপুর প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে, নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) থেকে সেবা নিতে গিয়ে। বিবিএস-এর ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’ জরিপের তথ্য অনুসারে, গত এক বছরে বিআরটিএ থেকে সেবা নেওয়া নাগরিকদের ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ ঘুষ বা দুর্নীতির সম্মুখীন হয়েছেন।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চাঁদপুর অফিসের সব সেবা ঘুস, দুর্নীতি ও দালালচক্রে আটকা পড়েছে। দালাল পরিবেষ্টিত এ অফিসে দীর্ঘদিন ধরে থাকা কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের ‘বিশ্বস্ত দালালচক্র’ তৈরি করেছেন। তাদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই অফিসের সেবাপ্রার্থীরা। ঘুষ ও দালাল ছাড়া মিলে না কোন সেবা। অন্যথায় হতে হয় হয়রানির শিকার।
কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে আবেদনে ও সাপোর্টিং ডকুমেন্টে নানা রকম ভুল ধরে করা হয় হয়রানি। ফলে হয়রানি এড়াতে দালালের শরণাপন্ন হতেই হয়।
কয়েকজন সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, টাকা ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া এখানে অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চাঁদপুর কার্যালয়ে গাড়ির নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, নম্বর প্লেট লাগানো ও মালিকানা হস্তান্তরসহ বিভিন্ন সেবা নিতে এসে গ্রাহকরা পদে পদে ভোগান্তিতে পড়েন।
এ কার্যালয়ে এলে দালালদের দেখলে মনে হবে তারা দপ্তরেরই কর্মচারী।
কর্মচারীদের সঙ্গে বাইরের লোকরা মিলে অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করেছে এ দপ্তর। কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব অনিয়ম পর্যায়ক্রমে সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
এ কার্যালয়ে কয়েকদিন অবস্থান করে সেবা নিতে আসা লোকজন, দালাল চক্রের সদস্য ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ দপ্তরে সরকারি জনবলের সংখ্যা তিন।
কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন মোটরযান পরিদর্শক এবং অপরজন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার)। এছাড়া দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক একজন কর্মচারী কাজ করেন।
এদের বাইরে দালাল হিসেবে অফিসের চেয়ার টেবিল ব্যবহার করে কাজ করেন মো. শহীদ, মো. শাহজাহান, মো. মানিক ও মোহাম্মদ আলী।
তারা ছাড়াও টাকার বিনিময়ে কাজ করিয়ে দেন অটোরিকশাচালক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা রিপন ও ট্রাক লরি শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা মন্টু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কর্মচারী জিয়া হক হলেন অফিসের সব অনিয়মের ‘সমন্বয়ক’। তাকে সহযোগিতা করেন শহীদ, শাহজাহান, আলী ও মানিক।
এইসব অনিয়মের বিষয়ে বাংলা ৫২ নিউজ ডটকম থেকে বারবার ফোন দিলেও সরকারি পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান ফোন রিসিভ করেননি ।