ঢাকা , সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফরিদগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমিটির কার্যক্রম স্থগিত থাকার কারণে পুনরায় আহবায়ক কমিটি গঠন সাটিয়াকোলা আঞ্জুমানে কাদেরিয়া খানকায় পবিত্র আশুরা পালিত পবিত্র আশুরায় ঢাকায় তাজিয়া মিছিল শুরু জাবির দর্শন এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুর শাহরিয়ার, সাধারণ সম্পাদক রাসেল বাংলাদেশ সফর বাতিল করল ভারত ইলিয়াস আলী ফিরবেন, প্রত্যাশা এম এ মালিকের নেত্রকোনায় প্রাইভেট পড়তে বেরিয়ে স্কুলছাত্র নিখোঁজ বান্দরবান জেলা মডেল মসজিদের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ড.আফম খালিদ হোসেন তিতাসে মাদক নির্মূলে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রেরণা দেবে: প্রধান উপদেষ্টা

সাটিয়াকোলা আঞ্জুমানে কাদেরিয়া খানকায় পবিত্র আশুরা পালিত

সাংবাদিক

আব্দুল জব্বার, বিশেষ প্রতিনিধি।। 

আজ ১০ ই মুহাররম ১৪৪৭ হিজরি, ৬১ হিজরির ১০ ই মহাররম শহীদ সম্রাট হযরত ইমাম হুসাইন ও সকল শহীদানের শাহাদাতের স্মরণে আজ পবিত্র আশুরা অনুষ্ঠিত হয়।

সাটিয়াকোলা আঞ্জুমান কাদেরিয়া খানকা শরিফ থেকে সকাল ৯ ঘটিকায় মিছিল বেড় হয়ে কাশিনাথপুর ফুলবাগান মোড় প্রদক্ষিত করে পুনরায় খানকা প্রাঙ্গনে ফিরে আসে।

এরপর খানকা প্রাঙ্গণে হুসাইন স্বরণে মাতুম অনুষ্ঠিত হয়। আওলাদে রাসূলের আদর্শে নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠান পরিচালিত হয় সিলসিলা এ কাদেরিয়া রাযকযাকিয়া সাজ্জাদানশীল হুযুর পাক হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসূব আলী আল কাদেরি আল বাগদাদি এর পরিচালনায়।

উল্লেখ্য ৫৬ হিজরিতে আমির মুয়াবিয়া (রা.) তাঁর পুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনীত করেন এবং তার পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ শুরু করেন।

তবে হোসাইন ইবনে আলি (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.), আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা.) এবং আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বাইয়াত দিতে অস্বীকার করেন, অন্যদের বাইয়াতে বাধাও দেননি।

৬০ হিজরির রজব মাসে মুয়াবিয়া
(রা.) ইন্তেকাল করলে ইয়াজিদ দামেস্কে শাসনভার গ্রহণ করেন।

তিনি বাইয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগের নির্দেশ দেন, যা ইতিহাসবিদদের মতে তার প্রথম রাজনৈতিক ভুল ছিল।

ইয়াজিদের নির্দেশে মদিনার প্রশাসক ওয়ালিদ ইবনে উতবা হোসাইন (রা.) ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.)-কে বাইয়াতের জন্য তলব করেন। তারা বাইয়াত প্রত্যাখ্যান করে মদিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।

ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁদের এই প্রত্যাখ্যানের কারণ ছিল রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে খোলাফায়ে রাশিদিনের শুরাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা।

মক্কায় অবস্থানকালে হোসাইন (রা.) কুফাবাসীর কাছ থেকে বারবার চিঠি পান, যাঁরা তাঁকে সেখানে যেতে অনুরোধ করেন। মুসলিম ইবনে আকিল ১১ জিলকদ ৬০ হিজরিতে কুফার সন্তোষজনক পরিস্থিতির উল্লেখ করে চিঠি পাঠান।

এই চিঠি হোসাইন (রা.)-এর কাছে পৌঁছাতে তিন-চার সপ্তাহ লাগে। এ সময়ে কুফার পরিস্থিতি বদলে যায়। ইয়াজিদ নুমান ইবনে বাশির (রা.)-কে কুফার গভর্নর পদ থেকে সরিয়ে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে দায়িত্ব দেন। ইবনে জিয়াদের নির্দেশে মুসলিম ইবনে আকিলকে হত্যা করা হয়, যা হোসাইন (রা.)-এর অজানা ছিল।

৬০ হিজরির জিলহজ মাসে হোসাইন (রা.) পরিবার-পরিজনসহ ৬০ জন সঙ্গী নিয়ে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশে রওনা হন।

ইরাক যাত্রার পথে হোসাইন (রা.) মুসলিম ইবনে আকিলের হত্যার সংবাদ পান। এ সময় তাঁর অনেক সঙ্গী তাকে ছেড়ে চলে যান, কেবল মক্কা থেকে আগত কিছু সঙ্গী তাঁর সঙ্গে থাকেন।

৬১ হিজরির মহররম মাসের ২ তারিখে তিনি কারবালায় পৌঁছান, যেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ৪৫ জন অশ্বারোহী ও ১০০ জন পদাতিক যোদ্ধা।

১০ ই মহররম, আশুরার দিন, উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের সেনাপতি উমর ইবনে সাদের নেতৃত্বে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী হোসাইন (রা.)-এর মুখোমুখি হয়। হোসাইন (রা.) তিনটি প্রস্তাব পেশ করেন—মক্কায় ফিরে যাওয়া, ইয়াজিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অথবা সীমান্তে জিহাদের সুযোগ। ইবনে জিয়াদ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বাইয়াতের শর্ত আরোপ করেন।

হোসাইন (রা.) তা অস্বীকার করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এই যুদ্ধে তিনি তাঁর শিশুপুত্রসহ ৭২ জন সঙ্গীর সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ১২:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
৫১০ Time View

সাটিয়াকোলা আঞ্জুমানে কাদেরিয়া খানকায় পবিত্র আশুরা পালিত

আপডেটের সময় : ১২:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

আব্দুল জব্বার, বিশেষ প্রতিনিধি।। 

আজ ১০ ই মুহাররম ১৪৪৭ হিজরি, ৬১ হিজরির ১০ ই মহাররম শহীদ সম্রাট হযরত ইমাম হুসাইন ও সকল শহীদানের শাহাদাতের স্মরণে আজ পবিত্র আশুরা অনুষ্ঠিত হয়।

সাটিয়াকোলা আঞ্জুমান কাদেরিয়া খানকা শরিফ থেকে সকাল ৯ ঘটিকায় মিছিল বেড় হয়ে কাশিনাথপুর ফুলবাগান মোড় প্রদক্ষিত করে পুনরায় খানকা প্রাঙ্গনে ফিরে আসে।

এরপর খানকা প্রাঙ্গণে হুসাইন স্বরণে মাতুম অনুষ্ঠিত হয়। আওলাদে রাসূলের আদর্শে নিজেদের জীবন পরিচালনা করতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠান পরিচালিত হয় সিলসিলা এ কাদেরিয়া রাযকযাকিয়া সাজ্জাদানশীল হুযুর পাক হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসূব আলী আল কাদেরি আল বাগদাদি এর পরিচালনায়।

উল্লেখ্য ৫৬ হিজরিতে আমির মুয়াবিয়া (রা.) তাঁর পুত্র ইয়াজিদকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনীত করেন এবং তার পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ শুরু করেন।

তবে হোসাইন ইবনে আলি (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.), আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রা.) এবং আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বাইয়াত দিতে অস্বীকার করেন, অন্যদের বাইয়াতে বাধাও দেননি।

৬০ হিজরির রজব মাসে মুয়াবিয়া
(রা.) ইন্তেকাল করলে ইয়াজিদ দামেস্কে শাসনভার গ্রহণ করেন।

তিনি বাইয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগের নির্দেশ দেন, যা ইতিহাসবিদদের মতে তার প্রথম রাজনৈতিক ভুল ছিল।

ইয়াজিদের নির্দেশে মদিনার প্রশাসক ওয়ালিদ ইবনে উতবা হোসাইন (রা.) ও আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.)-কে বাইয়াতের জন্য তলব করেন। তারা বাইয়াত প্রত্যাখ্যান করে মদিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যান।

ইতিহাসবিদদের মতে, তাঁদের এই প্রত্যাখ্যানের কারণ ছিল রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত করে খোলাফায়ে রাশিদিনের শুরাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা।

মক্কায় অবস্থানকালে হোসাইন (রা.) কুফাবাসীর কাছ থেকে বারবার চিঠি পান, যাঁরা তাঁকে সেখানে যেতে অনুরোধ করেন। মুসলিম ইবনে আকিল ১১ জিলকদ ৬০ হিজরিতে কুফার সন্তোষজনক পরিস্থিতির উল্লেখ করে চিঠি পাঠান।

এই চিঠি হোসাইন (রা.)-এর কাছে পৌঁছাতে তিন-চার সপ্তাহ লাগে। এ সময়ে কুফার পরিস্থিতি বদলে যায়। ইয়াজিদ নুমান ইবনে বাশির (রা.)-কে কুফার গভর্নর পদ থেকে সরিয়ে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে দায়িত্ব দেন। ইবনে জিয়াদের নির্দেশে মুসলিম ইবনে আকিলকে হত্যা করা হয়, যা হোসাইন (রা.)-এর অজানা ছিল।

৬০ হিজরির জিলহজ মাসে হোসাইন (রা.) পরিবার-পরিজনসহ ৬০ জন সঙ্গী নিয়ে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশে রওনা হন।

ইরাক যাত্রার পথে হোসাইন (রা.) মুসলিম ইবনে আকিলের হত্যার সংবাদ পান। এ সময় তাঁর অনেক সঙ্গী তাকে ছেড়ে চলে যান, কেবল মক্কা থেকে আগত কিছু সঙ্গী তাঁর সঙ্গে থাকেন।

৬১ হিজরির মহররম মাসের ২ তারিখে তিনি কারবালায় পৌঁছান, যেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ৪৫ জন অশ্বারোহী ও ১০০ জন পদাতিক যোদ্ধা।

১০ ই মহররম, আশুরার দিন, উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের সেনাপতি উমর ইবনে সাদের নেতৃত্বে ইয়াজিদের সেনাবাহিনী হোসাইন (রা.)-এর মুখোমুখি হয়। হোসাইন (রা.) তিনটি প্রস্তাব পেশ করেন—মক্কায় ফিরে যাওয়া, ইয়াজিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, অথবা সীমান্তে জিহাদের সুযোগ। ইবনে জিয়াদ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বাইয়াতের শর্ত আরোপ করেন।

হোসাইন (রা.) তা অস্বীকার করে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এই যুদ্ধে তিনি তাঁর শিশুপুত্রসহ ৭২ জন সঙ্গীর সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন।