Saturday , 27 April 2024
শিরোনাম

চোখ উঠলে অবশ্যই যা করবেন

চোখ যে শুধু মনের কথা বলে তা নয়, চোখ আপনার রোগের কথাও বলে। চোখের সাদা অংশ লালচে হলে, চোখ দিয়ে পানি পড়লে বা ব্যথা অনুভব করলে সাধারণত আমরা চোখ ওঠা বলি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে কনজাংটিভাইটিস। গরম আর বর্ষায় এই চোখ ওঠার প্রকোপ বাড়ে। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো- চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়।

সম্প্রতি রাজধানীসহ সারা দেশে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। রোগটি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনও কখনও অ্যালার্জির কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সে সময় এ রোগটা বেশি হয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, এ রোগটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই হতে পারে। যাদের চোখ জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ময়লা আসে তাহলে সেটা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। একে বলে ব্যাকটেরিয়াল কনজাংটিভাইটিস। আর শুধু ভাইরাল ইনফেকশন হলে চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং লাল হলে হয়ে যায়। এক্ষেত্রে চোখে হাত দেয়া যাবে না। এলার্জি হয় এমন খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করে বলেন, তবে এ রোগ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কিছুদিন ঘরে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেই ঠিক হয়ে যায়।

রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ফাতিমা-তুজ জোহরা জানান, যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে, তাই যতটা সম্ভব আইসোলেশনে থাকা ভালো। ছোঁয়াচে এবং বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় বলে লোকজন থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। সানগ্লাস পরে থাকতে হবে। চুলকানি হলে রোগী ঠান্ডা এবং এলার্জিজনিত রোগের ওষুধ খেতে পারেন। চোখের কিছু ড্রপ রয়েছে, আমরা সেগুলো সাজেস্ট করি। তবে অনেকেই বার বার চোখে হাত দেয় বা চুলকায়। এতে চোখের ক্ষতি হতে পারে। তবে ভয়ের তেমন কোনো কারণ নেই। সাধারণ ৬ থেকে ৭ দিনেই এটি ভালো হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, করোনার এ সময় চোখ ওঠা নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে। কারণ করোনার সংক্রমণে কারও কারও চোখে প্রদাহ হতে দেখা যাচ্ছে। কাজেই এ সময় চোখ উঠলে করোনার অন্য উপসর্গ রয়েছে কি না, তা খেয়াল করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনে করোনার পরীক্ষা করাতে হবে।

এ বিষয়ে করণীয়-

# সাবানপানি দিয়ে কিছুক্ষণ পরপরই হাত পরিষ্কার করতে হবে।

# কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহারের পর টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। না হলে ব্যবহার করা টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

# চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করুন। এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু, ধোঁয়া থেকে চোখ রক্ষা পাবে। আলোয় অস্বস্তিও কমবে।

# চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন

# নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত কাপড়চোপড় অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না। একইভাবে অন্যের ব্যবহৃত প্রসাধনসামগ্রী ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রোগীর ব্যবহার করা চলবে না।

# চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারও আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। এতে আবার কনজাংটিভাইটিস হতে পারে।

# প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

# ভিটামিন সি এর পাশাপাশি সুষম খাবার খাওয়া।

# এ সময়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

Check Also

লোকসভা নির্বাচন: ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে দ্বিতীয় ধাপে

ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন চলছে। আজ শুক্রবার ছিল দেশটির দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ। ১৩টি রাজ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x