Sunday , 5 May 2024
শিরোনাম

জেনে নিন ইতিকাফের রীতিনীতি

আজ ২০ রমজান। মাগফেরাত থেকে মুক্তির ১০ দিনের আজ শেষ দিন। আজ সূর্যাস্তের পর থেকে শুরু হচ্ছে জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক। শবে কদর তালাশ করার দশক। ইতিকাফ করার দশক। কেউ ইতিকাফে বসতে ইচ্ছা করলে ২০ রমজানের সূর্যাস্তের পূর্বেই বসতে হবে। তাই ইতিকাফকারী ব্যক্তির আজ ইফতারের আগেই ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে।

ইতিকাফের মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্যে এসে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দেয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরত করে প্রতিবছরই ইতিকাফ করতেন। তাই, ইতিকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। ইতিকাফ মহান ইবাদত।

মসজিদ ব্যতীত ইতিকাফ শুদ্ধ নয়। পাঞ্জেগানা ও জামে মসজিদে ইতিকাফ করা শুদ্ধ। জুমার জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভাঙবে না। শেষ দশকের সুন্নাত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শরয়ি বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে।

সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করার জন্য বের হওয়া জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি অতীব প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে গোসলের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। আর ইস্তেঞ্জা করতে গিয়ে অজু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোনো অসুবিধা নেই। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪৪০, ২/৪৪৫, আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৫)

জানাজা ও রোগীর সেবা ইত্যাদির জন্য মসজিদ থেকে বের হলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে (ফাতাওয়া শামি : ২/২১৩)। মানসিক প্রয়োজন ব্যতীত ইতিকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন- প্রস্রাব-পায়খানা অথবা পানাহার, যদি তা মসজিদে পৌঁছে দেওয়ার কেউ না থাকে। অনুরূপভাবে প্রয়োজনীয় প্রত্যেক বস্তু, যা মসজিদে সম্পাদন করা সম্ভব নয়, তার জন্য বের হলে ইতিকাফ নষ্ট হবে না।

ইতিকাফ অবস্থায় মেসওয়াক অথবা ব্রাশ করার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যাবে না। গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। হ্যাঁ, অজু করার জন্য বের হলে তখন মেসওয়াকও করে নেবে। শুধু মেসওয়াক বা ব্রাশ করার জন্য বাড়তি সময় যাতে নষ্ট না হয়। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩৯) এ হিসাবে ফোনে কথা বলার জন্যও মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই।

ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত। তাই কেউ যদি অসুস্থতার দরুন অপারগ হয়ে রোজা ভাঙতে হয়, তবে ইতিকাফও ভেঙে যাবে (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩১)।

অসুস্থতার দরুন নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অপারগতার দরুন গুনাহগার হবে না। (ফাতাওয়া কাজী খান : ১/২২৩)

ইতিকাফে যেসব কাজ করা মাকরুহ

ইতিকাফে যেকোনো অপ্রয়োজনীয় কাজই মাকরুহ। যেমন- অনর্থক গল্প করা, বিনা প্রয়োজনে বেচাকেনা করা, মোবাইলে গেম খেলা, ফেসবুকে চ্যাট করা ইত্যাদি। একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বেচাকেনা করার অনুমতি আছে।

ব্যবসায়ী মালামাল মসজিদে নিয়ে আসা মাকরুহ। যদিও একান্ত প্রয়োজনে বেচাকেনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ইতিকাফ অবস্থায় চুপ করে বসে থাকাও কোনো ইবাদত নয়। তাই ইবাদত মনে করে চুপ করে বসে থাকাও মাকরুহ। (আহকামে ইতিকাফ ফাজায়েল ও মাসায়েল, পৃষ্ঠা : ৬৫)

মহিলারা নিজ নিজ গৃহের নিভৃত স্থানে ইতিকাফ করতে পারেন। ইতিকাফ সম্পর্কে আল কোরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আর আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকুকারী ও সিজদাহকারীদের জন্য পবিত্র করো। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১২৫)। আর ইতিকাফের বিধান বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে : আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৮৭)। (সংগৃহীত)

Check Also

চট্রগ্রামে মৎস্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন নির্মান কাজের উদ্বোধন করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: আজ ০৫ মে রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামে মৎস্য অধিদপ্তরাধীন সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x