Saturday , 27 April 2024
শিরোনাম

পশ্চিমারা ব্যর্থ, বিশ্বের ভবিষ্যৎ এশিয়াতেই: পুতিন

নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে একঘরে করার নিরর্থক ও আগ্রাসী প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি করছে পশ্চিমারা। তবে পশ্চিমারা এতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, আর ঠিক তখনই এশিয়ার ভবিষ্যৎ ক্রমেই আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। বুধবার রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শহর ভ্লাদিভোস্টকে আয়োজিত ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ভ্লাদিভোস্টকে বক্তব্যকালে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান হুমকি হিসেবে করোনাভাইরাস মহামারির জায়গা দখল করেছে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো।

তিনি বলেন, আমি পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা জ্বরের কথা বলছি। অন্য দেশের ওপর নানা আচরণ চাপিয়ে দেওয়া, সার্বভৌমত্ব থেকে বঞ্চিত করা এবং নিজেদের ইচ্ছার অধীনে রাখার জন্য পশ্চিমারা নির্লজ্জ আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পুতিন বলেন, ইতিহাসের গতিপথ প্রতিহত করার চেষ্টায় পশ্চিমা দেশগুলো কয়েক শতাব্দী ধরে গড়ে ওঠা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মূল স্তম্ভগুলো নষ্ট করছে। এতে মার্কিন ডলার, ইউরো ও পাউন্ড স্টার্লিংয়ের ওপর মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে।

রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি দাবি করে এবং ক্ষমতাসীন নব্য নাৎসিদের উৎখাতের অজুহাতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেন আক্রমণ করে রুশ বাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার ওপর আধুনিক যুগের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা।

মূলত এসব নিষেজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তি পঙ্গু করে করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল পশ্চিমাদের। কিন্তু তা সফল হয়নি।

পুতিন বলেন, পশ্চিমারা তাদের ইচ্ছা বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তাদের শক্তি কমে গেছে এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এশিয়া। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অপরিবর্তনীয় পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্বের গতিশীল-প্রতিশ্রুতিশীল দেশগুলো, বিশেষ করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূমিকা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

পুতিন আরও বলেন, রাশিয়াকে পশ্চিমাদের অর্থনীতি ও প্রযুক্তিগত আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এতে বেশ কিছু শিল্প ও অঞ্চলে সামান্য অসুবিধার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

বক্তৃতায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনের বন্দর দিয়ে যেসব শস্য বাইরে আসছে দরিদ্র দেশগুলো পরিবর্তে তার বেশির ভাগই যাচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো গত কয়েক দশক এবং শতাব্দীতে উপনিবেশবাদী হিসেবে কাজ করেছে এবং তারা আজও তাই করে যাচ্ছে। তারা আবারও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঠকাচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে বিশ্বে খাদ্য সংকট আরও বাড়বে। এতে অভূতপূর্ব মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছেন তিনি।

উল্লখ্য, জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির বিষয়ে একমত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন। তারপর থেকেই কয়েক হাজার টন শস্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এতে করে বিশ্বে খাদ্য সংকট এবং খাদ্য পণ্যের দাম যেভাবে বেড়ে গিয়েছিল সে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তার মূল বক্তৃতায়, পুতিন শস্য রপ্তানির রেফারেন্সের বাইরে ইউক্রেনকে খুব কমই উল্লেখ করেন। কিন্তু যখন একজন মডারেটর জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে সংঘাত থেকে কিছু হারিয়েছে কিনা, এর জবাবে পুতিন বলেন আমরা কিছু হারাইনি এবং কিছু হারাবো না। রাশিয়া লাভ করেছে এবং নতুন করে আবির্ভূত হবে।

পুতিন বলেছিলেন, আমরা যা অর্জন করেছি তার পরিপ্রেক্ষিতে, আমি বলতে পারি যে আমাদের সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী করাই মূল লাভ এবং এটি এখন যা ঘটছে তার অনিবার্য ফলাফল। । এটি শেষ পর্যন্ত আমাদের দেশকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করবে।

 

Check Also

লোকসভা নির্বাচন: ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে দ্বিতীয় ধাপে

ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন চলছে। আজ শুক্রবার ছিল দেশটির দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ। ১৩টি রাজ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x