Wednesday , 8 May 2024
শিরোনাম

প্রেমের টানে আমেরিকান যুবক গাজীপুরে

প্রেমের কাছে সব কিছুই তুচ্ছ। প্রেম মানে না কোন বাধা, কোন ভৌগোলিক সীমারেখা, ধর্ম, বর্ণ কোনো কিছুই। তাইতো প্রেমের টানে সুদূর আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে বাংলাদেশে এসে সোজা বিয়ে করলেন মিশৌরী স্টেটের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান। প্রেমিকা হলেন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনী ও মৃত সিকন্দার আলীর মেয়ে সাইদা ইসলাম (২৬)।

কনের নানা মোশারফ হোসেন মাস্টার জানান, ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকন্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর মা ও তার ছোট বোনকে নিয়ে সাইদা ঢাকা থেকে চলে আসেন গাজীপুরের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকায় নানা মোশারফ হোসেন মাস্টারের বাসায়। এখানেই এখন তারা বসবাস করছেন। বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিকে স্নাতক করেন সাইদা। সাইদা জানান, ২০২১সালে এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রথম পরিচয় রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে। তারা নিজেদের ফোন নম্বর ও এড্রেস বিনিময় করেন। এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের মধ্যে। ফেসবুক ও ফোন নম্বরে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। এভাবে কথা বলতে বলতে দুইজন দুইজনকে ভালোবেসে ফেলেন। প্রায় এক বছর তারা ফেসবুকেই চুটিয়ে প্রেম করেন। এভাবে ব্যক্তি সম্পর্ক পারিবারিক সম্পর্কে রূপ নেয়।

শেষে দু’জনে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। রাইয়ান বিয়ে করার জন্য তার দেশেই খৃষ্ট ধর্ম ত্যাগ করে যথানিয়মে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে এ বছরের ২৯ মে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে বাংলাদেশে পৌঁছান তিনি। এদিনই দুইজনের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। তারপর সেখান থেকে সাইদার সঙ্গে সোজা গাজীপুরে নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান কফম্যান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন তারা।

তিনি এখন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া বাজারের পাশেই মোশারফ মাস্টারের বড়িতে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গহনা ও কাপড়-চোপড়সহ মোবাইল ফোন কেনার জন্য রাইয়ান, সাইদার কাছে অর্থ পাঠান। রাইয়ান বাংলাদেশে আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনা-কাটাও সম্পন্ন করেন সাইদা। এদিকে সুদূর আমেরিকা থেকে সুদর্শন ও ৬ফুট উচ্চতার এ যুবক গাজীপুর এসে স্থানীয় এক তরুণীকে বিয়ের খবরে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমান।

৩জুন শুক্রবার নব দম্পতি স্থানীয় চান্দনা চৌরাস্তা বাজারে কেনা-কাটা করতে যান। এ দেশের বাজারের পরিবেশ নিয়ে এক মন্তব্যে রাইয়ান বলেন, খুবই জনাকীর্ণ ও গোলমেলে। রাস্তা-ঘাটের পরিবেশ খুবই নোংরা। তবে সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশীদের বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে রাইয়ান বলেন বাঙ্গালীরা খুবই অতিথি পরায়ণ। আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন, আদর, আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। যা আমেরিকায় বিরল।

বিয়ে পর সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান রাইয়ান। তিনি বলেন, আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র (কে-ওয়ান) ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন। পরে সেখানেই তারা সংসার ধর্ম পালন করবেন। রাইয়ান আমেরিকার নিজ এলাকায় একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন। লেখাপড়া মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত। তার মা-বাবা ছাড়াও এক বড় ভাই রয়েছেন। তারা সেখানে প্রত্যেকেই আলাদাভাবে বসবাস করেন।

Check Also

১৩৯ উপজেলায় আজ ভোট, ইসির যত প্রস্তুতি

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোট গ্রহণ বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠিত হবে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x