Saturday , 27 April 2024
শিরোনাম

বিশ্বে ৪ কোটির বেশি মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখে- জাতিসংঘ

স্টাফ রিপোর্টার : সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটে জনগণের জীবিকা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় গত বছর ক্ষুধার মুখোমুখি হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৯ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছেছে। এছাড়া আরও ৪ কোটিরও বেশি মানুষকে তীব্র ক্ষুধায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ২০২১ সালের বার্ষিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা যখন সতর্ক করে দিয়েছেন তখন এফএও বলেছে, ২০২১ সালে আরও প্রায় ৪ কোটি মানুষকে ‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়’ ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই সমস্যার মুখোমুখি হওয়া ৫৩ দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কঙ্গো, ইথিওপিয়া, ইয়েমেন এবং আফগানিস্তান। তবে আফগানিস্তানে গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর ব্যাপক অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। যে কারণ দেশটিতে লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছেন।

একজন ব্যক্তির পর্যাপ্ত খাদ্য না পাওয়া তার জীবন অথবা জীবিকাকে তাৎক্ষণিক বিপদে ফেলে। আর এই পরিস্থিতিকে ‌‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছে জাতিসংঘ। এফএও বলেছে, এই ক্ষুধা মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে পরিচালিত করতে পারে এবং এর কারণে ব্যাপক মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।

২০১৬ সালে এফএও, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর থেকে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এফএও বলেছে, ২০২১ সালের এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তিন সঙ্কট ‘সংঘাত, চরম বৈরী আবহাওয়া এবং অর্থনৈতিক ধাক্কা’র কারণে। এর ফলে বিশ্বের ৫৩টি দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক এই সংস্থা বলেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ খাদ্য সঙ্কট এবং দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো দেশগুলোর ওপর সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে। বিশ্বজুড়ে গম এবং সূর্যমুখী তেল থেকে সার পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের প্রধান রপ্তানিকারক ইউক্রেন এবং রাশিয়া। এর আগে এফএও বলেছিল, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের কারণে গত মার্চে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছায়।

সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধ ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ব্যবস্থার আন্তঃসংযুক্ত বৈশিষ্ট্য এবং ভঙ্গুর ব্যবস্থাকে তুলে ধরেছে। ২০২১ সালে বিশ্বের অন্তত ২৪টি দেশে তীব্র ক্ষুধার প্রধান কারণ ছিল সংঘাত এবং নিরাপত্তাহীনতা; যা ১৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিপর্যস্ত ২১টি দেশের ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে।

আফ্রিকার আটটি দেশের ২ কোটি ৩৫ লাখ মানুষের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ ছিল চরম বৈরী আবহাওয়া। এফএও বলেছে, বিশ্বে রোপণের মৌসুম শুরু হচ্ছে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা স্থিতিশীল ও বৃদ্ধি করতে দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। নষ্ট করার মতো কোনও সময় নেই বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘের এই সংস্থা।

Check Also

লোকসভা নির্বাচন: ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে দ্বিতীয় ধাপে

ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন চলছে। আজ শুক্রবার ছিল দেশটির দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ। ১৩টি রাজ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x