Saturday , 27 April 2024
শিরোনাম

‘মাতৃভাষার গুরুত্ব’

একটি জাতির জাতিসত্ত্বা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম মাতৃভাষা। স্বীকৃত মাতৃভাষা ছাড়া কোনো জাতির আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদাবোধ সমৃদ্ধ হয় না। তাই পৃথিবীর প্রতিটি জাতিগোষ্ঠী তাদের মাতৃভাষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মাতৃভাষার গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে একটা জাতি এগিয়ে যায়। মাতৃভাষার প্রতি দরদ ও মমত্ববোধ সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠেছে কবিতায়। মাতৃভাষা নিয়ে লেখা তেমন পাঁচটি কবিতা পড়া যাক বাংলা অনুবাদে।

১। নাজমুল হক লিখেছেন;

ক,খ,গ,ঘ….
যখন আমি প্রতিটি বাংলা অক্ষর পড়ি
গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি
সালাম,বরকত, রফিক,জব্বার….

ক, খ, গ,ঘ…..
যখন আমি প্রতিটি অক্ষর লিখি
অন্তর চক্ষু দিয়ে দেখতে পাই
তোমাদের মুখচ্ছবির প্রতিফলন।

ভালোবাসা কত গভীর হলে
যার জন্য রক্ত দেয়া যায়
হাসিমুখে?

ভালোবাসা কত গভীর হলে
যার জন্য রক্ত দেয়া যায়
রক্তের সাগর বয়ে যায়?

এই ফেব্রুয়ারিতে
জাতি তোমাদের স্মরণ করে
গভীর শ্রদ্ধায়, কৃতজ্ঞতায়
আমাদের মাথা নত হয়ে আসে
গভীর নীরবতায়।

২। ভারতীয় কবি কেদারনাথ লিখেছেন;

মাতৃভাষা

পিঁপড়েরা যেমন
নীড়ে ফিরে,
কাঠঠোকরা যেমন
বনে,
এবং বিমান যেমন বিমানবন্দরে

আকাশ জুড়ে ওড়ে।

হে আমার ভাষা
আমি ফিরি তোমার কাছে,
নীরবতায় যখন
স্বর রুদ্ধ হয়ে আসে
পীড়া হয় অন্তরে।

৩। জয়াতিসসা লিয়ানেজ লিখেছেন;

মাতৃভাষা

অন্য সবার যেমন একটা পরিচয় থাকে,
নয় বিলিয়ন মানুষের মধ্যে আমারো একটা পরিচয় আছে।
আমাকে সিংহলিজ বলে ডাকা হয়
আমার মাতৃভাষার পরিচয়ে।
সিনহালা আমি তোমাকে নিয়ে গর্ব করি।

৪। গজানান মিশরা লিখেছেন;
মায়ের ভাষাকে*

আমি ফিরতে চাই
আমার মায়ের কাছে,
মায়ের বুলির কাছে।
মেঘ যেভাবে ফেরে
সাগরের কাছে।

আমাকে ফিরতে দাও
আমার মাতৃভূমে,
মায়ের ভাষার কাছে।
যেখানে আমি খুঁজে পাই আমার
নিজস্ব স্বর্গ।

৫। অনিথা দেবী পিল্লাই লিখেছেন;

মায়ের ভাষা*

আমি তিন ভাষায় কথা বলি
দুই ভাষায় পড়ি এবং এক ভাষায় লিখি।
তৃতীয়টি
যেটা আমি লিখতেও পড়তে পারি না
নিরবে জড়িয়ে রাখি।
তিনি আমার মা।
তাঁর নাম মালয়ালাম।
তিনি আমার ঘরে থাকেন
আমার আত্মীয়-স্বজনের সাথে।
তিনি কথা বলেন শুধু বন্ধ দরোজার পেছন থেকে
এবং আমি তাঁকে সবসময় বুঝতে পারি না।
তবুও আমি জন সমাগমে খুঁজে বেড়াই
অপরিচিতদের সাথে হেসে হেসে
যখন আমি বুঝতে পারি তাঁরা তাঁকে চেনেন।

আমার বয়স যখন ছয়
তামিল ভাষায় আমার হাতে খড়ি।
তাঁরা বলেছিলেন তিনি আমার আম্মা।
তাঁরা বলেছিলেন আমি তাঁর।
তিনি আসলেই ভালোবাসার মতো
সবসময় থাকতেন সাইনবোর্ড ও ফর্মে
তিনজনে পাশাপাশি।
আম্মা এখনো কানে কানে মধুরতার গান করেন
স্বপ্নে।

অনুবাদঃ আলমগীর মোহাম্মদ,
বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, কুমিল্লা।

Check Also

২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস

২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পর বাঙালি জাতিকে দীর্ঘ ২৪ বছর পাকিস্তানি শোষকদের বর্বরোচিত শোষণের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x