Saturday , 27 April 2024
শিরোনাম

মারাত্মক খাদ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে নিম্ন আয়ের দেশ: বিশ্বব্যাংক

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার সংঘাত অব্যাহত থাকলে উচ্চমূল্যসহ নিম্ন আয়ের দেশগুলো মারাত্মক খাদ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক। এমনকি দুই দেশের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে বৈদেশিক আয় কমে যাবে ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটও তৈরি হবে।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি, অর্থ ও প্রতিষ্ঠান) ইন্দারমিট গ্রিল।

তিনি জানান, কিছু উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ খাদ্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ইউরোপ এবং মধ্যএশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মুষ্টিমেয় অর্থনীতির দেশে আমদানি করা গমের ৭৫ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে দেশ দুটি। সংঘাতের কারণে এই দেশগুলো রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে শস্য এবং বীজ উৎপাদন আমদানি করতে পারছে না। খাদ্য পরিবহনও ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সরবরাহে ব্যাঘাতের পাশাপাশি খাদ্যের উচ্চমূল্য, ক্ষুধা ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কারণ হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে ইন্দারমিট গ্রিল আরো জানান, রাশিয়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের বাজারেও একটি প্রধান শক্তি। এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারের এক-চতুর্থাংশ, কয়লার বাজারের ১৮ শতাংশ, প্লাটিনামের বাজারের ১৪ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের বাজারে ১১ শতাংশ অবদান রাখে। এই পণ্যগুলোর সরবরাহে বিরাট প্রভাব পড়েছে। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতিরও ব্যাপক প্রবৃদ্ধিও কমিয়ে দেবে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশনা থেকে অনুমান করা হয়েছে যে তেল-মূল্যের ১০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এটা চলতে থাকলে পণ্য-আমদানিকারী উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধি হতাশাজনকভাবে কমবে।

‘রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতসহ নানা কারণে গত ছয় মাসে তেলের দাম ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। যদি এটি স্থায়ী হয় তবে চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কের মতো তেল আমদানিকারক দেশগুলোতেও প্রবৃদ্ধি কমবে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ শতাংশ, তুরস্ক ২ থেকে ৩ শতাংশ এবং চীন ও ইন্দোনেশিয়া ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সংঘাতের কারণে দেশগুলো প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে না।’

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে বৃহত্তম গণঅভিবাসন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার আশঙ্কা করছে, খুব শিগগির শরণার্থীর সংখ্যা ৪০ লাখে উন্নীত হবে। বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর আকস্মিক আগমনকে মেনে নেওয়া আয়োজক সরকারের জন্য কঠিন। এটি জনসাধারণের অর্থায়ন ও পরিষেবা সরবরাহের ওপর চাপ সৃষ্টি করে- বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

‘অর্থনৈতিক মন্দা পূর্ব ইউরোপের বাইরের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেসব দেশ প্রচুর পরিমাণে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ মধ্যএশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়া থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল- কিছু ক্ষেত্রে, এই রেমিট্যান্স দেশের জিডিপির ১০ শতাংশের মতো। মধ্যএশিয়ার অনেক দেশে সংঘাতের ফলে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

Check Also

লোকসভা নির্বাচন: ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে দ্বিতীয় ধাপে

ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন চলছে। আজ শুক্রবার ছিল দেশটির দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ। ১৩টি রাজ্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x