Tuesday , 7 May 2024
শিরোনাম

রাবিতে সাপের উপদ্রব, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী প্রতিনিধি:-কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে রাজশাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জলাশয় ও নিচু জমিগুলো পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও রাস্তাঘাটসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ক্রমেই বেড়ে চলেছে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব। এতে আতঙ্কে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে ক্যাম্পাসের ঝোঁপঝাড় পানিতে ভরে গেছে। ফলে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেড়েছে। আবাসিক হলগুলোর নিচতলার কক্ষগুলো বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। এছাড়া রাস্তা-ঘাটেও চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এজন্য সবাইকে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যে কোনো সময় সাপের কামড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সাপের উপদ্রব কমাতে এ বিষয়ে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবিও জানান তারা।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকাসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ হয়ে আছে। এছাড়া কিছুদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় জলাশয় ও ড্রেন পূর্ণ হয়ে গেছে। এসব কারণে বিষধর সাপ ঝোঁপঝাড় ও জলাশয় থেকে বেরিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত।

রাবিতে সাপের উপদ্রব রোধে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আবাসিক হলসহ ভিন্ন স্থানে বিষাক্ত সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে।এর ফলে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মাসে ইকোলজি অ্যন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ক্যাম্পাসে তিনবার রেসকি অভিযান চালানো হয়েছে। গত ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা পূর্বপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ৪-৫ হাত লম্বা একটি বিষধর খৈয়া গোখরা সাপ, ২৫ আগস্টে ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরি থেকে দুইটি ঘরগিন্নি সাপ এবং আগস্টে শের-ই বাংলা এ কে ফজলুল হক হল থেকে খৈয়া গোখরার বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে । এছাড়া শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের গণরুমেও পরপর দুইটি সাপ দেখা গেছে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেইক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মিজানুর রহমান তাসিব বলেন, রাজশাহীতে অতি বৃষ্টির কারণে ক্যাম্পাসে ইদানিং বিষধর খৈয়া গোখরা সাপের আনাগোনা বেড়েছে। জুন-জুলাই মাসে সাধারণত এসব সাপ তাদের বাচ্চা ফুটিয়ে থাকে। ওই বাচ্চা সাপগুলো সাধারণত খাবারের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। এজন্য সেগুলো আমাদের চোখে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসের সামনের ফাকা জায়গার ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। হলের পিছনের ও একটু দূরে যে ঝোপঝাড় আছে সেগুলো পরিষ্কার করলে কিন্তু বিপরীত রূপ ধারণ করতে পারে।
জীববৈচিত্র্যের অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে সাপ আছে এবং সেটা থাকবেই। এগুলো মেরে শেষ করা যাবে না।

শুক্রবারও আমীর আলী হলে নির্বিষ সাপ মারা হয়েছে। কোনো বিষধর সাপকে মারতে গেলে কিন্তু তারা প্রতিরোধ করতে কামড় দেয়ার চেষ্টা করবে। তাই সাপ না মেরে সচেতনতার সাথে চলাফেরা করলে কোনো সমস্যা হবে না। আর কোনো লোকালয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় সাপ দেখলে তাদের টিমের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এসে রেসকিউ করবেন বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি সংগঠন কাজ করছে। তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি। ইতোমধ্যে তাদের সরঞ্জাম কেনার জন্য আমরা সাহায্য করেছি। তারা ৪ জুলাই রোববার রাবি ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে অ্যান্টি ভেনম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে কেউ এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা কর হবে।

Check Also

গ্রামে লোডশেডিং না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহরেও যাতে লোডশেডিং না হয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x