Friday , 26 April 2024
শিরোনাম

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতা দরকার। বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা না পেলে মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশ সংকটে পড়বে।

বুধবার (২০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে ‘রোহিঙ্গা অ্যান্ড নার্কো টেরোরিজম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ডিপ্লোমেটস পাবলিকেশন এই সেমিনারের আয়োজন করে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইয়াবা বাংলাদেশে তৈরি হয় না। ইয়াবা তৈরি হচ্ছে মিয়ানমারে। অথচ এর ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এর চোরাচালান হচ্ছে বাংলাদেশে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের বাহক ও চোরাচালানকারী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা এলাকাকে মাদকের হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে দিনের পর দিন মাদকের চোরাচালান অনেক বেড়েছে। রোহিঙ্গারা এই মাদক চোরাচালানের বাহন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। তাদের আশ্রয় দিয়ে নানা আঙ্গিকে বাড়তি চাপ ও ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে রয়েছে মাদক চোরাচালান, মানবপাচার, সীমান্ত নিরাপত্তা। মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে গিয়ে এই চাপ নিতে হচ্ছে। কোনো ধরনের মাদক উৎপাদন না করেও বাংলাদেশই এর ভুক্তভোগী। তাই সহসাই রোহিঙ্গা সমস্যার সংকট নিরসনে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চান তিনি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দেশের সীমান্তে মাদক চোরাচালান, অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। রোহিঙ্গা এলাকায় বেড়েছে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের সংখ্যাও। সিনথেটিক ড্রাগস আসছে সীমান্ত দিয়ে। যেখানে বাহক হিসেবে কাজ করছে রোহিঙ্গারা। সেই সঙ্গে অস্ত্র চোরাচালানও বেড়েছে, যা আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।

মানবপাচারের ঘটনাও বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে অনেককেই পাচার করা হচ্ছে। পুলিশ ছাড়াও সেখানে নিয়োজিত আনসার, বিজিবি, এপিবিএন ও সেনাবাহিনী অপরাধ দমন ও অপরাধীদের ধরতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে মানবপাচার ঘটনা কমে আসবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫০ শতাংশই শিশু। যাদের অনেকেই সন্ত্রাসবাদ, মাদক চোরাচালানে জড়াচ্ছে। মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাকানিজমে ঘাটতি আছে। আসিয়ানকে কার্যকর করা যেতে পারে। আসিয়ানে রোহিঙ্গা সমস্যা তুলে ধরতে হবে।

মিয়ানমারই রোহিঙ্গা সমস্যা তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছিল এর সমাধান করা। আশাকরি মিয়ানমার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবে।

সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। এছাড়াও ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, সৌদি অ্যাম্বাসেডর, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখওয়াত হোসেন, আর্ম ফোর্সেস ডিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান।

Check Also

থাইল্যান্ডের রাজা-রানীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাওচা-উয়ুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x