Tuesday , 7 May 2024
শিরোনাম

উৎসবমুখর পরিবেশে ৫ দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

আলকামা রমিন, খুবি প্রতিনিধিঃ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুলের আয়োজনে ৫ দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় চারুকলা প্রাঙ্গণে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেন, আর্ট বা শিল্পকর্ম আমাদের আন্দোলিত করে। প্রতিটি মানুষের মধ্যে শিল্পীসত্ত্বা লুকায়িত রয়েছে। আমরা সবাই এর বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারি না। চারুকলার শিক্ষার্থীরা যা চিন্তা করে তা তাদের হাতের গুণে শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এটি একটি অনন্য অসাধারণ প্রতিভা। তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানের সাথে শিল্প-সাহিত্য, ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিল্পকলা এমন একটি বিষয়, যা মানুষকে মানুষ হিসেবে তৈরি করে। সভ্যতা মানুষ তৈরি করে। রাষ্ট্র সভ্যতা তৈরি করে না, সহায়তা করে। সভ্যতার মূলে রয়েছে মানুষের চিন্তা শক্তি, যার সাথে জড়িত রয়েছে শিল্পকলা।
উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষা-গবেষণায় নয়, শিল্প চর্চায়ও জেগে উঠেছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়ে যেতে চারুকলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে নানা ধরনের স্বীকৃতি ও সম্মাননা পাচ্ছেন। যা আমাদের জন্য গর্বের ও আনন্দের বিষয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করতে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। চারুকলার শিক্ষার্থীদের উচ্চতর গবেষণার প্রয়োজন। এজন্য তাদের আরও বেশি গবেষণায় আগ্রহী হতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ গবেষণা অনুদানের ব্যবস্থা করবে। আজকের এই অবস্থান থেকে চারুকলা স্কুল আরও বেশি সমৃদ্ধ লাভ করবে- এটাই প্রত্যাশা করি।
শিল্পী শশিভূষণ পাল প্রতিষ্ঠিত খুলনা আর্ট কলেজকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একীভূত করে ইনস্টিটিউট এবং পরবর্তীতে স্কুলে রূপ দেওয়ায় উপাচার্য তৎকালীন কর্তৃপক্ষের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সাথে আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং ভবিষ্যতে চারুকলার জন্য পৃথক ভবনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা যুক্ত হওয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে অনেকটাই পূর্ণতা পেয়েছে। শিল্পীসত্ত্বা স্বাধীনভাবে বিকশিত না হলে সভ্যতার অগ্রগতি স্তব্ধ হয়ে যাবে। শিল্পকলা চর্চা মানুষের মনে সুকুমারবৃত্তি ঘটায়, নান্দনিকতা বিকাশ করে।
সভাপতির বক্তব্য রাখেন চারুকলা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নিহার রঞ্জন সিংহ। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের প্রধান মো. আমিনুল ইসলাম এবং ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিন প্রধান রকিব হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মো. শেখ সাদী ভূঁইয়া। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের দেওয়ান স্বীকৃতি রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের প্রভাষক ফারজানা জামান।
অনুষ্ঠানে ৪টি ক্যাটাগরিতে ৩৯ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে তাদের শিল্পকর্মের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে উপাচার্য শিল্পী শশিভূষণ পাল আর্ট গ্যালারিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে এ প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া শিল্পকর্মগুলো ঘুরে দেখেন। এসময় চারুকলা স্কুলভুক্ত ডিসিপ্লিনসমূহের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা ৬টায় চারুকলা প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রদর্শনী আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের প্রদর্শনীতে ৪ শতাধিক শিল্পকর্ম স্থান পাচ্ছে। প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত।

Check Also

ভারতে তৃতীয় দফায় লোকসভার ভোটগ্রহণ চলছে

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। মঙ্গলবার (৭ মে) স্থানীয় সময় সকাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x