Sunday , 28 April 2024
শিরোনাম

দুই যুগের পুরনো জরাজীর্ণ ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাজারও মানুষের চলাচল ।

 মো .আহসানুল ইসলাম আমিন,স্টাফ রিপোর্টার : মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের বয়রাগাদী গ্রামের গাজীবাড়ী মসজিদ সংলগ্ন তালতলা-বয়রাগাদী খালের ওপর প্রায় দুই যুগের আগে নির্মিত জরাজীর্ণ ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে গাজীবাড়ী, হাজীবাড়ী, দেওয়ান বাড়ীর দুইশতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ । সরেজমিনে দেখাযায়, ব্রিজটি দীর্ঘদিন থেকে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ব্রিজের রেলিং ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে  পড়েছে।এছাড়াও ব্রিজটিতে উঠার জন্যে দুই প্রান্তের বাঁশের পাটাতন ও ভাঙাচোরা ও নড়বড়ে এ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শতশত শিক্ষার্থী এবং দুইশতাধিক পরিবারের হাজারও লোক এ ব্রিজটি দিয়েই চলাফেরা করে। যেকোনো মুহূর্তে  বাঁশের মাচা ভেঙে  যাতায়াত বন্ধসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বয়রাগাদী গ্রামের গাজীবাড়ী, হাজীবাড়ী,দেওয়ানবাড়ীর যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তালতলা-বয়রাগাদী খালের গাজীবাড়ী মসজিদ সংলগ্ন এ ব্রিজটি প্রায় দুই যুগ আগে নির্মিত হয়। এ ব্রিজটি কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। প্রতিদিন চলাচলের জন্য ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয় স্কুল, কলেজ, মাদরাসার কয়েক শ’ শিক্ষার্থীকে। এছাড়াও তিনটি বাড়ীর হাজারও মানুষের হাঁসপাতাল ও হাটাবাজারে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা দুই যুগ আগে নির্মিত এ ব্রিজটি। তাছাড়া এই ব্রিজটি দিয়ে অটোরিক্সা এবং রিক্সা ছাড়া অন্য কোনো যাত্রীবাহী পরিবহন ও কৃষি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারেনা এ ব্রিজটি দিয়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। ব্রিজটিতে উঠার জন্যে দুই পাশের বাঁশের পাটাতনও জরাজীর্ণ , রেলিং ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেক আগেই। ইতোমধ্যে পাটাতনের বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের মতো সৃষ্টি হয়েছে।  তারা জানায়, ব্রিজটি একদিকে জরাজীর্ণ, অন্যদিকে একেবারে সংকুচিত। যার দরুন পণ্যবাহী কোনো যান এ ব্রিজটি সহজে চলাচল করতে পারছে না।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী মো. সোহেল জানান, প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি পার হয়ে তাকে কলেজে আসা-যাওয়া করতে হয়। তাছাড়া স্থানীয় বয়রাগাদী উচ্চ বিদ্যালয় সহ আশপাশের স্কুল এবং কলেজে কয়েকশ’ শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে হলেও এ ব্রিজটির জায়গায় নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি তার।

স্থানীয় কৃষক জসিম গাজী ও রফিক দেওয়ান বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে এ ব্রিজটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে গেলে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ হয়ে পড়বে। ব্রিজটি ভাঙাচোরা হওয়ার কারণে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটি পার হয়েই তাদের উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদসহ হাটবাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহমান বলেন , সরকার দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় বড় অনেক ব্রিজ নির্মাণ করছেন। এ এলাকার হাজারো মানুষের কথা চিন্তা করে এখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

ব্রিজ নির্মাণের বিষয়য়ে সিরাজদিখান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আইমিন সুলতান জানান,ঝুঁকিপূর্ণ ওই ব্রিজটির স্থলে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্যে  গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮তারিখে দরপত্র সম্পুর্ণ হয়েছে। ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য এই ব্রিজের নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে ৮৪ লাখ ৮১হাজার ৩৬৯টাকা। ব্রিজটি নির্মাণের কাজ পেয়েছেন জুনায়েত এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।  খালে পানি চলে আসায় ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেনি , তবে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।#

Check Also

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় সনাতন সেবা সংঘের অভিষেক অনুষ্ঠিত

দিলীপ কুমার দাস নিজস্ব প্রতিবেদক ।   ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার বিসকা বাথুয়াদী শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x