Saturday , 11 May 2024
শিরোনাম

ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে ভরে উঠছে নদী, বন্যার শঙ্কা

সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জে সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, চলতি, বৌলাই, চেলা, পিয়াইনসহ প্রধান প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল স্বল্প সময়ের জন্য প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

তবে এখন পর্যন্ত কোনও নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। চলতি বছর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় না হওয়ায় বর্ষার আগমন এক থেকে দেড় মাস পিছিয়েছে। যেটা গত বছর এপ্রিলেই শুরু হয়েছিল। গতবারের তুলনায় এবার বর্ষা শুরু হতে এক মাস দেরি হয়েছে। দীর্ঘ সময় সুনামগঞ্জবাসী তীব্র দাবদাহ সহ্য করেছেন। প্রচণ্ড রোদে শুকিয়ে যায় হাওরগুলো।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ১০ জুন থেকে সুনামগঞ্জে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে চেরাপুঞ্জিতে ৭২০ ও সুনামগঞ্জে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি চার মিটার বেড়েছে। হু হু করে পানি ঢুকছে বিশাল হাওরে। ঢলের পানিতে পূর্ণ হয়ে উঠেছে হাওর। তবে এখন পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেনি।

চেরাপুঞ্জির পানি ছাড়াও সীমান্তবর্তী নদীগুলো দিয়ে ঢলের পানি সুরমা নদী ও হাওরে নামছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে সুরমার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ বন্যার শঙ্কায় উদ্বিগ্ন।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চল স্বল্প সময়ের জন্য প্লাবিত হতে পারে। এদিকে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ১০০ মিটার ডুবন্ত সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের সেরুল মিয়া বলেন, কয়েক দিন আগেও সুরমা নদীতে পানি প্রবাহ ছিল না। ৩/৪ দিনের মধ্যে পাহাড়ি ঢলে পানি প্রবাহ সচল হয়েছে। জেলার নদীগুলো এখন কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ। নদী থেকে হাওরের তলদেশ নিচু থাকায় নদীর পানি হাওরের প্রবেশ করছে।

অলিরবাজার গ্রামের সিরাজ মিয়া বলেন, নদীতে ঢলের পানি নেমেছে। শ্রমজীবী মানুষ খুব কষ্ট করছেন। টানা বৃষ্টিতে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের চালবন গ্রামের আলী রাজ বলেন, বৃষ্টি ও ঢলের পানি নিয়ে মানুষ অনেক বিপদে আছেন। গত ৭২ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে। তবে গতকাল থেকে আজ বৃষ্টি কম হয়েছে।

সুনামগঞ্জ শহরের বড়পাড়া এলাকার রিকশাচালক আওলাদ হোসেন বলেন, বৃষ্টির জন্য রিকশা চালাতে কষ্ট হয়। মানুষ ঘর থেকে বেশি বের হয় না। পেটের দায়ে গরিব মানুষকে ঘর থেকে বের হতে হয়।

ভ্যানচালক সবুজ মিয়া বলেন, বৃষ্টির জন্য ট্রিপ কমে গেছে। সারা দিন বৃষ্টি পড়ে তাই ভ্যান কেউ নিতে চান না।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মন্তুষ দাস বলেন, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের শক্তিয়ারখলা থেকে দুর্গাপুর ১০০ মিটার নামক স্থানে মিছাখালী ড্যামের পানি হাওরে প্রবেশ করে। এটি একটি ডুবন্ত সড়ক। বর্ষা এলে ঢল নামে আবার ঢল নামা বন্ধ হয়ে গেলে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

জেলা প্রশাসক দিদারের আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে সেভাবে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া আছে।

Check Also

রাণীশংকৈলে বিষ খেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের মৃত্যু। 

আনোয়ারুল ইসলাম,রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি।। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার মীরডাঙ্গীএলাকার একটি আমবাগানে শুক্রবার ১০ মে  কীটনাশক খেয়ে আম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x