Friday , 10 May 2024
শিরোনাম

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’, সমালোচনার ঝড়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্র নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সে প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বাংলা সিনেমার ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ এবং ‘শয়তান দেহ পাবি, চিন্তা পাবি না’ এই উদ্ধৃতি উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল।

প্রশ্নটি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ। তিনি অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয়ের অতিথি শিক্ষক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওই বিভাগে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই। এ জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হলেও মেহেদী হাসান বাংলাদেশ স্টাডিজের ক্লাস নেন। সংশ্লিষ্ট বিষয় হওয়ায় তিনি মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্নটি করেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, হেজিমনি (আধিপত্য) বোঝানোর জন্য সিনেমার এ ডায়ালগ বেছে নেওয়া সংগত নয়। শব্দগুলো সাধারণত নেতিবাচক আলোচনার জন্ম দেয়। অন্য উদাহরণের মাধ্যমেও বিষয়টি স্পষ্ট করা যেত। তা ছাড়া প্রশ্নপত্রে বাংলা ভাষা ইংরেজি শব্দে উল্লেখ করা কতটা যৌক্তিক, সেটিও বিবেচনার বিষয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় মূলত ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ হেজিমনির আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করতেই ‘শয়তান দেহ পাবি, মন পাবি না’ এবং ‘শয়তান দেহ পাবি, চিন্তা পাবি না’ উল্লেখ করে একটি প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নপত্রে বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনা করতে বলা হয় শিক্ষার্থীদের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

ফেসবুকে এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যদি নৈতিকতা শিক্ষায় অবদান না রেখে অশ্লীলতা ছড়ান, এমন অপ্রীতিকর ভাবধারার প্রশ্ন করেন, সেটা জাতিকে পথভ্রষ্ট করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা কি পড়াবেন এবং কি বোঝাবেন সে সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত। পর্যাপ্ত পড়াশোনা ও প্রিপারেশন না নিয়ে শিক্ষকতা করতে আসলে এরকম ই হবে।

অ্যাকাউনিটং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, কেন এমন শব্দ প্রশ্নপত্রে ব্যবহার করা হয়েছে তার সঠিক ব্যাখ্যা যিনি প্রশ্নটি করেছেন (রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান সোহাগ) তিনি বলতে পারবেন। আমি আশা করি তার সঙ্গে কথা বললে স্পষ্ট ব্যাখা পাওয়া যাবে। তারপরও এমন শব্দ ব্যবহারে আমি নিজেও বিব্রত বোধ করছি।

তবে প্রশ্নকর্তা মেহেদী হাসান মনে করেন,তার করা প্রশ্নে কোনো সমস্যা নেই। তিনি দাবি করেন, প্রশ্নে নেগেটিভ কিছু নেই। এটি কোট-আনকোটের মধ্যে আছে। যাদের পড়িয়েছি, সেখানে টেক্সট ডকুমেন্ট দেওয়া আছে। যারা হেজিমনি পড়েছে, তারা কোনো সমালোচনা করবে না। হয়তো যারা জানে না, তারা সমালোচনা করছে। ব্রিটিশ রাজরা কীভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে হেজিমনিকে প্রতিষ্ঠা করেছে, তার সঙ্গে লাইনটির যথার্থ উদাহরণ পাওয়া যাবে। এখনও প্রতিটি জায়গায় হেজিমনি আছে। এমনকি প্রশ্নপত্র নিয়ে যেটি হচ্ছে, সেটিও হেজিমনির বহিঃপ্রকাশ।

Check Also

‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সম্মত দুই মন্ত্রণালয়’

মৌলিক ন্যূনতম শিক্ষা অধিকারের ধাপ প্রাথমিক থেকে নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরে উত্তরণের লক্ষ্যে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x