Friday , 10 May 2024
শিরোনাম

অ্যাক্রিলামাইড কথন

অ্যাক্রিলামাইড (Acrylamide, C3H5ON) হল একটি অসম্পৃক্ত কার্বনিল গ্রুপ দিয়ে তৈরি একটি যৌগ । Acrylamide হল একটি রাসায়নিক যা উচ্চ-তাপমাত্রার রান্নার প্রক্রিয়ার (ভাজা, রোস্টিং এবং বেকিং) সময় কিছু খাবারে তৈরি হতে পারে । খাদ্য উপাদান যেমন শর্করা (গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ) ও অ্যামিনো অ্যাসিড (অ্যাসপারাজিন) যুক্ত খাবারকে উচ্চ-তাপমাত্রার রান্নার প্রক্রিয়ার সময় মাইলার্ড রিঅ্যাকশন এর বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে অ্যাক্রিলামাইড তৈরী হয়। অ্যাক্রিলামাইড সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রায় (120 °C এর উপরে) ভাজা, রোস্টিং এবং বেকিং করলে অ্যাক্রিলামাইড তৈরী হয় । এটি খাদ্য প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়ালস বা পরিবেশ থেকে আসে না।

আবিষ্কার
সর্বপ্রথম 2002 সালে খাদ্যে অ্যাক্রিলামাইডের উপস্থিতি প্রকাশ পায় । এই আবিষ্কারটি বৈজ্ঞানিক জগতে ব্যাপক কৌতূহল জাগিয়েছিল ।
খাবারে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা
খাবারে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা অনেক কারণের উপর নির্ভর করে যেমন খাবারের ধরন এবং বিষয়বস্তু, প্রক্রিয়াকরণ কৌশল এবং স্টোরেজ অবস্থার উপর নির্ভর করে । খাবারে এর পরিমাণ নির্ধারণের জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে খাওয়া খাবারে অনেক গবেষণা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণায়, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা 779-1299 μg/kg পাওয়া গেছে এবং আলুর চিপসে 211-3515 μg/kg, যা অন্যান্য খাবারে অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রার তুলনায় বেশ বেশি। অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা রুটিতে 31-454 μg/kg, কফিতে 135-1139 μg/kg, এবং পানীয় কফিতে 5.30-79.5 μg/kg, শিশুর বিস্কুটে 12.3-1270 μg/kg পাওয়া গেছে। যা নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
খাবারে নির্ধারিত মাত্রা
ইউরোপীয় ফুড সেফটি অথরিটি (EFSA) জানিয়েছে যে তরুণ, প্রাপ্তবয়স্ক, বয়স্ক গোষ্ঠীর মধ্যে গড় অ্যাক্রিলামাইড এক্সপোজার 0.4 থেকে 0.9 µg/kg bw/day এর মধ্যে। তাহলে ৬০ কেজি ওজনের একজন মানুষের দৈনিক ২৪ তো ৫৪ µg/day। পোলিশ খাবারের জন্য অ্যাক্রিলামাইডের মাত্রা <143 μg/kg এবং কিছু তুর্কি ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য 11.7-527 μg/kg নির্ধারণ করা হয়েছে।

খাবারে অ্যাক্রিলামাইডের উপস্থিতি কি ভোক্তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ?

অ্যাক্রিলামাইড রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কোষের ডিএনএ, আরএনএ এবং প্রোটিনের সাথে আবদ্ধ হতে পারে । 1994 সালে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (IARC) দ্বারা অ্যাক্রিলামাইডকে “মানুষের জন্য কার্সিনোজেনিক” যৌগ হিসাবে চিহ্নিত করা । ইউরোপীয় কমিশন অ্যাক্রিলামাইডকে 1B ক্যাটাগরির কার্সিনোজেন হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। ইউরোপীয় কেমিক্যাল এজেন্সি (2022) অত্যন্ত উচ্চ উদ্বেগের পদার্থের তালিকায় অ্যাক্রিলামাইড অন্তর্ভুক্ত করেছে ।

কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে?

ফ্রেঞ্চ ফ্রাইতে, আলুর চিপসে, টোস্ট, পিজ্জা, বার্গার, পাউরুটি, কেক, কফিতে, বিস্কুটে মাত্রারিক্ত অ্যাক্রিলামাইডের উপস্থতি পাওয়া গেছে, তাই এই খাবার গুলোকে এড়িয়ে চলাই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ।

লেখক:
জুয়েল রানা।
সিনিয়র লেকচারার
ডিপার্টমেন্ট অফ নিউট্রিশন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

Check Also

বাড়ছে করোনা, দেড় মাসে ১১ মৃত্যু

দেশে আবারও বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x